সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করছেন মার্ক কার্নি
Published: 21st, March 2025 GMT
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি দেশটির ফেডারেল সংসদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ২৮ এপ্রিল অথবা ৫ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, মার্ক কার্নি রোববার সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের এই তারিখ ঘোষণা করতে পারেন।
মার্ক কার্নি বলেছেন, তিনি গভর্নর জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বলতে পারবেন কখন নির্বাচন হতে যাচ্ছে। কানাডার অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী রূপ দিতে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঠিক রাখতে এই মুহূর্তে একটি শক্তিশালী সরকার দরকার। সেই কারণেই নির্বাচনের বিকল্প নেই। কানাডার নির্বাচনের আইন অনুসারে, ফেডারেল নির্বাচনের আগে প্রচারণার জন্য কমপক্ষে ৩৬ দিন সময় দেওয়ার বিধান রয়েছে।
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো’র সময়ে দেশটির নাগরিকদের মধ্যে যে জনমত জরিপ হয়েছিল তাতে ৬০ শতাংশ মানুষ সরকারের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ফেডারেল নির্বাচনে ৩৪৩টি আসনের মধ্যে আসনভিত্তিক যে জনমত জরিপ সেখানে লিবারেল পার্টি ১৮০ থেকে ১৯১ আসন, অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি ১২৪ থেকে ১৪১টি আসন পেতে পারে। যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠনের জন্য ১৭২টি আসনের দরকার হয়। লিবারেল পার্টির প্রতি কানাডিয়ানদের আস্থা বেড়ে গেছে। যেখানে গত দুই মাস আগেও লিবারেল পার্টি কনজারভেটিভ পার্টির তুলনায় অনেক পেছনে ছিল।
কানাডার রাজনীতিতে বা সরকার ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন এই মুহূর্তে কানাডার প্রয়োজন অর্থনৈতিক উন্নয়ন। মাল্টিকালচারালিজমের দেশ কানাডায় বিগত কয়েক বছরে প্রচুর সংখ্যক নতুন অভিবাসী আসায় দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নড়বড় হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি, বাড়ি ভাড়াসহ জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, কানাডার সরকারের পদক্ষেপে একের পর এক ক্রমাগত নতুন অভিবাসীর আগমনের ফলে ট্রুডো সরকার ইতোমধ্যেই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে যার ফলশ্রুতি জাস্টিন ট্রুডো’র পদত্যাগ।
কানাডার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, লিবারেল পার্টির নেতা হতে হবে এমন একজনকে যাঁর অর্থনীতির উপরে দক্ষতা রয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মনের ভাষা বোঝে। তাহলেই কানাডার অর্থনীতি আবার সচল হবে। কানাডা তার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে এমন নেতা নির্বাচন জরুরি। কানাডার বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল রাখা এবং ট্রাম্পের সঙ্গে ট্যারিফ আরোপের কানাডা ও আমেরিকার যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে তা সমাধানে এই মুহূর্তে মার্ক কার্নি উপযুক্ত। কানাডিয়ানদের এই ধারণার কারণে দিন দিন মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টি জয়ের ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মে মাসে বিজিবির অভিযানে ১৩৩ কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৫১২ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ হাজার ৫৪৪টি শাড়ি, ৫ হাজার ১৪০টি কাপড়, ৩ হাজার ৪৭২টি তৈরি পোশাক, ১৯ হাজার ৩১৪ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৫ হাজার ৪৪৩টি ইমিটেশন সামগ্রী, ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৫১টি আতশবাজি, ১৭ হাজার ৫২৩ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ১৫১ কেজি চা পাতা, ৯২ হাজার ৪৮৭ কেজি সুপারি, ৫৩ হাজার ৪০ কেজি চিনি, ২০ হাজার ৪৪২ কেজি সার, ২৯ হাজার ৯৮৫ কেজি কয়লা, ১০০ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৩৪১টি মোবাইল, ১৭ হাজার ৬৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৬ হাজার ৫৪০টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১৫,১১২টি চশমা, ৬ হাজার ৫৪৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫ হাজার ৯৬০ কেজি ভোজ্য তেল, ১০১০ লিটার ডিজেল/অকটেন, ১ হাজার ৫২৬ কেজি পিঁয়াজ, ৮ হাজার ৮২৬ কেজি রসুন, ২০ হাজার ৬৪২ কেজি জিরা, ১১ হাজার ২৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৫০ হাজার ১৯১ কেজি ফুচকা, ৯ হাজার ১৭৯ কেজি মাছ, ৫০ হাজার ৬০৩ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ৯৩৪ কেজি কফি, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৩ পিস চকোলেট, ১ হাজার ১৩১টি গরু/মহিষ, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৩টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ১৫টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯২টি নৌকা, ২৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৭২টি মোটরসাইকেল এবং ২২টি বাইসাইকেল।
আরো পড়ুন:
ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ
ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ৯মি.মি. পিস্তল, ২টি শট/পাইপ গান, ৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি ককটেল, ২৪টি গুলি এবং ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড।
এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম হেরোইন, ২৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ কেজি ৪১০ গ্রাম কোকেন, ১০ হাজার ৫২১ বোতল ফেনসিডিল, ৮ হাজার ৯৮৩ বোতল বিদেশি মদ, ৭১.২৫ লিটার বাংলা মদ, ৮১৩ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯১৩ কেজি ৬৩০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩০ হাজার ১১৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫৪ ঞাজার ৩৪৭ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫ বোতল এলএসডি, ২০ হাজার ৪৯৩টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৭৩৭টি এমকেডিল/কফিডিল এবং ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৫ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৭১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৯০ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি