আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
Published: 21st, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই-প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ছাত্র-জনতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারসহ, ইনকিলাব মঞ্চ ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ব্যানারে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে একটি মিছিল নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। পরে ভিসি চত্বর ঘুরে মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যে আসে।
আরো পড়ুন:
আ.
হিন্দু ধর্ম নিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীর কটূক্তি অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
এর আগে ইনকিলাব মঞ্চের মিছিলটি কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিন, শ্যাডো, সূর্য সেন হল, ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে আসে। অন্যদিকে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মিছিলটি মধুর ক্যানটিন, শ্যাডো, হলপাড়া, রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের দিকে যায়।
এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তুলে নানা স্লোগান দেন। পাশাপাশি ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদেও নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তারা ‘আওয়ামী লীগের বিচার চাই’, ‘আওয়ামী লীগের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’, ‘ইউনূস সাহেবের বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে’, ‘গণহত্যার বিচার চাই’, ‘অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে, নিষিদ্ধ করতে হবে’, ‘আওয়ামী লীগের বিষদাঁত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘শহীদের দিচ্ছে ডাক, আওয়ামী লীগ নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মিছিলে ‘খুনি লীগের পুনর্বাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘জুলাইয়ের বাংলায়, গণহত্যাকারীদের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ডও আন্দোলনকারীদের হাতে দেখা যায়।
মিছিল থেকে তারা আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী সংগঠন হিসেবে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা নেই’ প্রত্যাহারের দাবিতে এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/সৌরভ/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ স কর য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)