পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের ওদনকাঠী গ্রাম থেকে সাব্বির শিকদার (২৫) নামে এক অটোরিকশা চালককের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। হাতুড়ির আঘাতে তার মাথা পুরোপুরি থেতলে গেছে।

শুক্রবার দুপুরে ওদনকাঠী গ্রামের রাস্তার পাশ থেকে ওই রিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশ।

নিহত সাব্বির শিকদার (২৫) পিরোজপুর পৌরসভার রায়েরকাঠি এলাকার হারুন শিকদারের ছেলে।

শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা নির্জন রাস্তার পাশে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পিরোজপুর সদর থানায় খবর দেয়। পরে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি পুলিশের টিম দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের বাবা হারুন শিকদার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে ঘর থেকে বের হয় সাব্বির। এরপর সে রাতে বাড়ি না ফেরায় তার মোবাইলে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। শুক্রবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাব্বিরের মৃতদেহ দেখে শনাক্ত করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে তার অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি। 

পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো.

মুকিত হাসান খান জানান, সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়ন থেকে সাব্বির নামে এক রিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার কারণ এখনও উদঘাটন করা যায়নি। তবে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তা‌রে পুলিশ কাজ করছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ