সড়কের কাজের ‘উদ্বোধন’ করলেন বিএনপি নেতা, ‘জানেন না’ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা
Published: 21st, March 2025 GMT
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় সরকারি একটি সড়ক ইট দিয়ে পাকাকরণের কাজ ‘উদ্বোধন’ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য টি এস আইয়ূব। তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক পদেও আছেন। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় এক কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি পাকাকরণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
রাজনৈতিক নেতার সরকারি কাজের উদ্বোধন করার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নরসিংহপুর সিরাজের বাড়ি থেকে তোফায়েলের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কটির ইট বিছানোর কাজ শুরু হবে। কাজ শুরুর পর সুবিধামতো সময়ে ডিসি স্যার সড়কটির উদ্বোধন করবেন। ডিআরও (জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা) স্যারও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। আজ কেউ সড়কটির উদ্বোধন করেছেন কি না, জানি না।’
পিআইও কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ রাস্তা টেকসইকরণে হেরিং বোন বন্ডকরণ (এইচবিবি) প্রকল্পের আওতায় এক কিলোমিটার সড়কে ইট বিছানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করে পিআইও কার্যালয়। কাজটি পায় যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্বজন এন্টারপ্রাইজ। প্রায় ৭৩ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে চলতি মাসে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আগামী ৩০ জুন কাজটি শেষ করার কথা।
স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি জানান, ঠিকাদার এখনো সড়কের কাজ শুরু করেননি। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা নরসিংহপুর সড়কের শুরুতে ইট দিয়ে একটি পিলার তৈরি করেন। পিলারের ওপর সাদা পাথরের ওপর উদ্বোধনী নামফলকটি স্থাপন করা হয়। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক টি এস আইয়ূব নরসিংহপুর গ্রামের ফলকের সামনে আসেন। এরপর শতাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে তিনি সড়কটির উদ্বোধন করেন।
সড়ক পাকাকরণ কাজের উদ্বোধনী ফলক। শুক্রবার বিকেলে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নরসিংহপুর গ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত প রকল প সড়কট র ব এনপ র সড়ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাতিয়া ও রামগতি উপজেলার মাঝামাঝি এই সেতুর অবস্থান। আর ধসে পড়া সংযোগ সড়কটি পড়েছে রামগতির তেগাছিয়া বাজারে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে প্রবল জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে। এতে স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার বাসিন্দারা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের একাংশের মাটি সরে ধসে পড়েছে। বিষয়টি রামগতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানানো হয়েছে। তবে বিকেল নাগাদ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ধসের কারণে সড়কটি দিয়ে যানবাহন, এমনকি মানুষজনের চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত সেতু দিয়ে উভয় উপজেলার বাসিন্দারা তেগাছিয়া বাজারে যাতায়াত করেন। তেগাছিয়া বাজারের বড় অংশটি হাতিয়ার মধ্যে। আরেক অংশ রামগতি সীমানার ভেতরে। এ ছাড়া স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও সেতু।
স্থানীয় টাংকির বাজারের ঘাটে আসা ইলিশ লক্ষ্মীপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় এই সড়ক দিয়ে। তাই সেতুর সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় দুটি উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত সংযোগ সড়ক মেরামত না করলে মূল সেতুই ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাতিয়া-রামগতি উপজেলা সড়কের তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির সংযোগ সড়কের কিছু অংশ জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন।