‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে আপত্তি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
Published: 21st, March 2025 GMT
রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে ঘোষিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তিন দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের শঙ্কা, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় ভবিষ্যতে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
শুক্রবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড.
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থেকে ‘ঢাকা’ শব্দটি বাদ দিতে হবে। বিভ্রান্তি এড়াতে সম্পূর্ণ ভিন্ন, স্বতন্ত্র মৌলিক একটি নাম নির্ধারণ করতে হবে; যেমন ‘বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ (Central University of Bangladesh) বা ‘মহানগর বিশ্ববিদ্যালয়’ (Metropoliton University। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিকট আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানিয়ে নাম পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করতে হবে।
‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে আপত্তি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে ৫টি বিষয় উল্লেখ করেন।
নামজনিত বিভ্রান্তি: ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ও ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’- দুটি নামের মধ্যে মাত্র একটি শব্দের পার্থক্য রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।
স্থানীয় পর্যায়ে জটিলতা: বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে পার্থক্য করা কঠিন হবে, যা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে।
প্রতারণার ঝুঁকি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে মিল থাকায় টিউশন জালিয়াতি বা প্রতারণার সুযোগ তৈরি হতে পারে।
চাকরির বাজারে প্রতিকূলতা: চাকরির আবেদন প্রক্রিয়ায় দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে, যা তাঁদের চাকরিজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমস্যা: বিদেশি শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ঐতিহ্যবাহী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটির সংক্ষিপ্ত রূপ ‘DU’, যা দেশ-বিদেশে সুপরিচিত। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সাদৃশ্য বেশ কাছাকাছি। অন্যদিকে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামের সংক্ষিপ্ত রূপ ‘DCU’, যা ‘DU’ এর সঙ্গে উচ্চরণেও প্রায় কাছাকাছি। এতে করে শিক্ষার্থীদের পরিচয়, টিউশন, চাকরির ক্ষেত্র এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।