ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু মানুষ। ভোগান্তি এড়াতে পরিবার নিয়ে আগেভাগে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। গত ১৪ মার্চ যারা টিকিট কিনেছিলেন তারা আজ ভ্রমণ করছেন। তাই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপ দেখা গেছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামে যাওয়ার সময়ে আগেই স্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেকেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা পরিবারসহ বাড়ি যাচ্ছি আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে ঈদ করতে। এবার ঈদে আগেই ছুটি পাওয়ার কারণে তাড়াতাড়ি যেতে পারছি। এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক ভালো। তেমন ঝামেলা নেই। রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।”

রাজশাহীগামী আরেক যাত্রী তাবাসসুম মীম বলেন, “ঈদযাত্রায় প্রতিবারই প্রথম ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করি, বাচ্চাদের নিয়ে ভ্রমণ করা কষ্টকর।  যাতে কোন ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে না হয় তাই আগেভাগেই যাচ্ছি। ট্রেনে এবারের ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো।”

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন বলেন, “আজ সকাল ৬ টায় রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রার মধ্যমে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি৷ আরএনবি, রেলওয়ে পুলিশের কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে৷ সময়মতো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে৷ কোন ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা বাড়ি যেতে পারছেন এবং সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।” 

ঢাকা/রায়হান/টিপু   

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদয ত র

এছাড়াও পড়ুন:

একাত্তরে প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের পরে চব্বিশে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছি

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের পরে আমরা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছি। মানুষের ওপর মানুষের গোলামি খতম করে আল্লাহর গোলামি কায়েম করার জন্য আমাদের আবার তৃতীয়বার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। জাতীয় সংসদে আল্লাহর আইন পাস করতে হবে।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জুলাই ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে দলের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন।

মানুষের রচিত কোনো মতবাদ দিয়ে মানুষের মুক্তি আসবে না উল্লেখ করে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এ জন্য এ দেশে আল্লাহর আইন চালু করতে হবে। আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন মেনে চলতে হবে।’

সেমিনারে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু আজকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, হাসিনার আমলে সংঘটিত সব হত্যার বিচার করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার শহীদ ও আহত যাঁরা’ বইয়ের ইংরেজি ও আরবি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন এবং শহীদদের স্মৃতি-তথ্যসংবলিত ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতের এই সেমিনারে আরও কয়েকটি দলের নেতারাও বক্তব্য দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘ইসলাম কায়েম করা ছাড়া লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি বন্ধ হবে না। দেশে দুর্নীতিমুক্ত সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন চালু করতে হবে। তা না হলে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ হবে না।’

শহীদদের তালিকা করার জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদ জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শাসনামলে মুসলমানদের জঙ্গি হিসেবে অভিহিত করে তাঁদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। বর্তমানে একটি দলের মহাসচিব বলেছেন, দেশে দক্ষিণপন্থার উদ্ভব হয়েছে। দক্ষিণপন্থার উদ্ভব হলে তাতে তাঁদের সমস্যা কী? দক্ষিণপন্থার ভয় দেখিয়ে আবার জুলুম-নির্যাতন চালানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, দলের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসান, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামায়াত নেতা এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও রেজাউল করিম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ