অফিস ছুটি হয়েছে। কয়েকদিন পর ঈদ। তাই, পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পদ্মা সেতুর মাওয়া দিয়ে ঘরমুখো মানুষের যেন ঢল নেমেছে। এরই মধ্যে মাওয়া টোল প্লাজা থেকে চোখে পড়ছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। আজ থেকে শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। তাই ভোর থেকেই ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে।

পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি ছাড়িয়ে গেছে। ছুটির প্রথম দিনে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের ঢল নেমেছে। ভোর থেকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে পদ্মা সেতুর দিকে এগিয়ে আসছে মোটরসাইকেলের সারি। সেতুর টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও সাতটি বুথে টোল নিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না কর্তব্যরতরা।

সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, এবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সাতটি বুথে যানবাহনের টোল আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া ঈদে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নজরদারি বাড়িয়েছে সেতুর নিরাপত্তাকর্মীরা। তবে যানবাহনের তীব্র চাপে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে।

মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মা সেতুর কল্যাণে ভোগান্তি অনেকটা কমলেও মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপে সৃষ্টি হয়েছে ভোগান্তি। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি রয়েছে অন্যান্য পরিবহনের জটও।  

মাওয়া ফাঁড়ির ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল ইসলাম জানান, আজ ভোর থেকেই এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবহনের জট তৈরি হয়েছে। টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও সাতটি বুথে টোল নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। আজ সকালে বেশি চাপের কারণে মোটরসাইকেল বুথ বাড়িয়ে তিনটি করা হয়।

আজ ভোর রাত থেকেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের ঢল নামে। যা এখনও (বেলা ১১টা পর্যন্ত) অব্যাহত রয়েছে। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি অন্যান্য যাত্রীবাহী গাড়ির চাপও বেড়েছে। তবে মোটরসাইকেলের জন্য বরাবরের মতোই এবারও রয়েছে আলাদাভাবে টোল নেওয়ার ব্যবস্থা। বর্তমানে তিনটি বুথ দিয়ে মোটরসাইকেলের টোল আদায় করা হচ্ছে। তারপরও গাড়ির অতিরিক্ত চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে টোলপ্লাজা এলাকায়।

পদ্মা সেতুর সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, শুক্রবার সকাল ৬টার পর থেকে সেতুতে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল অস্বাভাবিক বেড়েছে। তাই, মোটরসাইকেলের টোল আদায়ের জন্য আলাদা আরও দুটি অস্থায়ী বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এখন সেতু এলাকায় মোট তিনটি বুথের মাধ্যমে মোটরসাইকেলের টোল আদায় করা হচ্ছে। তারপরও টোল প্লাজা থেকে এক কিলোমিটারের মতো গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঈদের ৯ দিনের ছুটির শুক্রবার প্রথম দিনে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেশি। চাপ সামাল দেওয়ার নিরলস চেষ্টা চলছে।

পদ্মা সেতু কর্তপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতুতে দ্বিতীয় দফায় বাইক চলাচল শুরু হয়। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন খুলে দেওয়া হলে বাইক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়। এতে কর্তৃপক্ষ সেতু দিয়ে বাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে। পরে অবশ্য আবার বাইক চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি জাকির হোসেন জানান, যাত্রী নিরাপত্তার জন্য পদ্মা সেতু এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি টহল টিম রাখা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের পৃথক টহল টিম মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে, যা এখনও অব্যাহত আছে।

অন্যদিকে ঈদযাত্রায় এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে ও ওভারটেকিং বন্ধে স্পিড গানের মাধ্যমে যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ।

তবে ঈদ ঘরমুখো মানুষজনের অভিযোগ, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহনের টোল আদায় কার্যক্রম ধীর গতিতে চলায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে গাড়িচালক ও যাত্রীদের। তাদের দাবি, দ্রুত টোল আদায় ও বুথ সংখ্যা বাড়ালে যাত্রী ভোগান্তি কমবে।

হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের পুরো এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তায় হাইওয়ে পুলিশের আটটি ইউনিট কাজ করছে। চালকরা যেন বেপরোয়া গাড়ি না চালায়; তার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসারও কাজ করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র ছ ট এল ক য় র জন য ঢল ন ম ঘরম খ হ ইওয়

এছাড়াও পড়ুন:

মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা

দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াই ফের জমে উঠতে চলেছে। ২০২২ সালের ঐতিহাসিক ‘ফিনালিসিমা’ জয়ের পর আবারও একই মঞ্চে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার সেরা দুই দল আর্জেন্টিনা ও স্পেন। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে এই বহুল আলোচিত দ্বৈরথ।

শুরুর দিকে টুর্নামেন্টটি নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে সব সংশয় কাটিয়ে সময়সূচি প্রকাশ করেছে কনমেবল। যদিও ম্যাচের চূড়ান্ত ভেন্যু এখনও নির্ধারিত হয়নি। সম্ভাব্য আয়োজক দেশ হিসেবে আলোচনায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও কাতার। অর্থাৎ, আয়োজক হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার দৌড় এখনও চলছে।

২০২৪ কোপা আমেরিকার ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা, যার নেতৃত্বে ছিলেন লিওনেল মেসি ও গোলরক্ষক মার্টিনেজ। অন্যদিকে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন। যেখানে ঝলক দেখিয়েছেন তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামাল ও পেদ্রি।

আরো পড়ুন:

যেন সোনার তৈরি পনির, প্রতি টুকরার দাম জানলে চমকে যাবেন

স্পেন দলে চমক, নেশন্স লিগ ঘিরে নতুন প্রত্যাবর্তনের গল্প

এই ম্যাচ ঘিরে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহ তুঙ্গে। একদিকে অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের প্রতীক মেসি, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা ইয়ামাল; দুজনের মুখোমুখি লড়াই ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

আর্জেন্টিনা যদি ফিনালিসিমায় আবারও জয় পায়, তবে তারা এই প্রতিযোগিতায় টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনন্য রেকর্ড গড়বে। আর স্পেন চাইবে তাদের তরুণ শক্তির ঝলকে এই প্রতিযোগিতার নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করতে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও