ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গভীর রাতে জানালা কেটে ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় দুই পরিবারের সদস্যদের চেতনানাশক স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। চোরদের ব্যবহৃত চেতনানাশকে দু’পরিবারের নারীসহ অসুস্থ ৭ জনকে মুমুর্ষ অবস্থায় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে এদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অজ্ঞান করে এই চুরি সংঘটিত হয়।

হাসপাতালে আসা চেতনানাশকে আহতরা হলেন- উপজেলার কোলা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের অসিম ভদ্র, তার মাতা লক্ষী ভদ্র, স্ত্রী সঞ্চিতা ভদ্র ও কন্যা স্মিতা ভদ্র, অপর পরিবারের অরুপ ভদ্র, তার স্ত্রী বিউটি ভদ্র ও বোন পূর্ণিমা ভদ্র।

চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের চিকিৎসা চলছে। সবাই এখন আশংকামুক্ত। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার কোলা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে ওই দুঃসাহসিক চুরির ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্য কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিথি রানী ভদ্র বলেন, “প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে অসিম ভদ্র ও অরুপ ভদ্রের পরিবার ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত গভীর রাতে চোরেরা জানালা কেটে ঘরে প্রবেশ করে। দুটি পরিবারের সকল সদস্যদের ঘুমন্ত অবস্থায় চেতনানাশক স্প্রের মাধ্যমে অজ্ঞান করে। এরপর চোরেরা অসিম ভদ্রের আলমারি ভেঙে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান আসবাবপত্র এবং অরুপ ভদ্রের বাড়ি থেকে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও আসবাব চুরি করে নিয়ে যায়। সব মিলিয়ে সংঘবদ্ধ চোরেরা দু’টি বাড়ি থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।”

এদিকে শুক্রবার সকাল পেরিয়ে গেলেও কাউকে না দেখে প্রতিবেশিদের সন্দেহ হয়। প্রতিবেশিরা ওই বাড়িতে এসে তাদের ডাকলেও কেউ কোন সাড়া দেয়নি। এরপর প্রতিবেশিরা ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখে সবাই অচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। আলমারি খোলা, জিনিসপত্র এলোমেলা এবং জানালা কাটা। এ সময় প্রতিবেশিরা অচেতন অবস্থায় ৭ জনকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.

মুনমুন জানান, বেলা ১১ টার দিকে ৭ জনকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাদের চিকিৎসা চলছে। অনুমান করা হচ্ছে, চেতনানাশক স্প্রে করে তাদেরকে অজ্ঞান করা হয়েছিল।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজাউল ইসলাম জানান, চিকিৎসার পর এখন সবাই সুস্থ।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, চুরির ঘটনা শুনে সেখানে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। পুলিশ চুরির মালামাল উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা/শাহরিয়ার/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ণ ল ক র পর ব র র অবস থ য়

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতাকে মারধর: খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি কারাগারে

খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলমের করা মামলায় সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাসান আল মামুন। খুলনা মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আদালত চত্বরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা মামুনকে লক্ষ্য করে ডিম ও পচা আম নিক্ষেপ করেন। তার শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। পরে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন সেনা সদস্যরা। 

মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম শহিদুল আলম বলেন, মামলাটিতে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন হাসান আল মামুন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার খুলনা মহানগর দায়রা জজ  আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় তৎকালীন ওসি মামুন নিজেই
ফখরুল আলমকে বেদম মারধর করেন। লাঠির আঘাতে ফখরুল আলমের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট মামুনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন ফখরুল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ