‘কাজের স্বাধীনতা দেবে বিসিবি’- সাক্ষাৎকারে সিমন্স
Published: 29th, March 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে ছয় মাসের মেয়াদ শেষ করেন ফিল সিমন্স। বিসিবির সঙ্গে নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হন ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আগামী দুই বছরে অনেক পরিকল্পনা তাঁর। গতকাল ইংল্যান্ড থেকে ফোনে গত ছয় মাসের অভিজ্ঞতা, জাতীয় দল নিয়ে আগামী দুই বছরের পরিকল্পনা সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেন টাইগার প্রধান কোচ। তাঁর বিশ্বাস, স্বাধীনভাবে কাজ করে বাংলাদেশকে বড় দলের পর্যায় নিয়ে যেতে পারবেন। ফিল সিমন্সের এই পরিকল্পনা শুনেছেন সেকান্দার আলী
সমকাল: দীর্ঘ মেয়াদে নিয়োগ পাওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন। বিগত ছয় মাসের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সিমন্স: প্রথম মেয়াদ স্বল্প সময়ের হলেও আনন্দদায়ক ছিল। কিছু ভালো রেজাল্ট আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছি। জয়ের ম্যাচে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে ছেলেরা। টি২০ সিরিজ জিতেছে ধারাবাহিক ভালো খেলে। সফরটি বেশ উপভোগ্য ছিল। খেলোয়াড়দের নিবেদন ও মনোভাব খুবই ইতিবাচক ছিল। মূলত এ কারণে আমি নতুন করে চুক্তি করতে আগ্রহী ছিলাম।
সমকাল: সম্প্রতি দল হিসেবে ভালো করতে না পারলেও কোনো পরিবর্তন আপনাকে নাড়া দিয়েছে?
সিমন্স: আমার কাছে মনে হয়, দলের চাওয়া পূরণ করার মতো সক্ষমতা তাদের আছে। খেলোয়াড়দের মধ্যে এই বিশ্বাসটাও তৈরি হচ্ছে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। খেলোয়াড়দের মধ্যে ভালো করার বিশ্বাস গড়ে দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।
সমকাল: ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই সময়ে বেসিক কী পরিবর্তন আনতে চান?
সিমন্স: প্রথম লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে প্রসারিত করা। খেলোয়াড়দের তিন সংস্করণে ম্যাচ জেতায় অভ্যস্ত করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, দল হিসেবে ধারাবাহিক পারফর্ম করা। একটি ওয়ানডে জিতে পরের পাঁচ ম্যাচে ভালো না খেললে কোনো মানে থাকবে না। ধারাবাহিকতা আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চেষ্টা থাকবে ধারাবাহিক ভালো খেলা।
সমকাল: পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের অভাব পূরণে কি ধরনের পরিকল্পনা নিচ্ছেন?
সিমন্স: আমি প্রথমে চেষ্টা করব ওয়ানডেতে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের বিকল্প নিতে। মুশফিক, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিবের স্থান পূরণ করার চ্যালেঞ্জ থাকলেও চেষ্টা করতে হবে। তারা দলের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ছিল এবং লম্বা সময় জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়ে গেছে। কীভাবে এবং কাদের দিয়ে তাদের স্থান পূরণ করতে পারি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচক, কোচিং প্যানেল, খেলোয়াড়– সবাই মিলে উত্তরণের চেষ্টা করব।
সমকাল: দুই বছর পর দলকে কোথায় দেখতে চান?
সিমন্স: বাংলাদেশকে দুই বছর পর আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দিকে দেখতে চাই। মাঠে নিয়মিত ভালো করছে, তা দেখতে চাই। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ম্যাচ জিততে পারবে বলে আশা করি। যার সঙ্গেই খেলুক, ম্যাচ জিততে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে আমি কাজ করছি। খেলোয়াড়দের মানসিকতা হতে হবে এমন– ভারত, অস্ট্রেলিয়া সবার সঙ্গে জিততে হবে। তা যেখানেই ম্যাচ খেলি না কেন, জয়ের মানসিকতা থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস, এ ক্ষেত্রে আমরা সফল হতে পারব।
সমকাল: বাংলাদেশ কেন যেন আইসিসি টুর্নামেন্টে ভালো করে না। এটা কি কোনো মনস্তাত্ত্বিক প্রতিবন্ধকতা?
সিমন্স: খুব অল্প সময় কাজ করেছি। এ ব্যাপারে খুব বেশি অভিজ্ঞতা হয়নি। আমার মনে হয় না বিষয়টি মনস্তাত্ত্বিক। একমাত্র সমস্যা হলো, বিশ্বাসের ঘাটতি। যে কারণে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করতে পারে না। মিডিয়া কী লিখছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী লেখা হচ্ছে, সেদিকে দেখার প্রয়োজন নেই। সফল হলে তারা ভালো লিখবে। ব্যর্থ হলো সেটাও লিখবে। তাই আমাদের ভালো খেলায় মনোযোগ দিতে হবে।
সমকাল: তিন সংস্করণে খেলোয়াড়দের আলাদা করার কোনো পরিকল্পনা আছে?
সিমন্স: না। আমার মনে হয়, কেবল ভারত তিন সংস্করণে তিনটি দল বানাতে পারে। আমাদের অত বেশি সংখ্যক খেলোয়াড় নেই।
সমকাল: বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন?
সিমন্স: এই সংস্কৃতি সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। আমার ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতাও আছে। আমি বিপিএল দেখেছি, ডিপিএল ফলো করছি। আমি বিশ্বাস করি, খেলোয়াড়রা বাংলাদেশ দলের জন্য ১১০ ভাগ দেওয়ার মানসিকতা পোষণ করবে। শতভাগ দিয়ে যারা চেষ্টা করে, আমরা তাদের সাপোর্ট করব। শতভাগ দেওয়ার পর ভালো নাও হতে পারে। তখন দেশের সবার উচিত হবে, আমাদের পাশে থাকা। কারণ, দল এবং খেলোয়াড়দের চাঙ্গা রাখা জরুরি।
সমকাল: বিসিবির কাছ থেকে শতভাগ সাপোর্ট পাওয়ার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
সিমন্স: আশা করি, পুরো সমর্থন পাব। এ ব্যাপারে আমাদের কথা হয়েছে। বোর্ড, খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ সবার দিক থেকে সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং সমর্থন থাকবে। বাইরের বিষয়ে খেলোয়াড়রা দুশ্চিন্তায় থাকলে মাঠে পারফর্ম করা চ্যালেঞ্জ থাকবে। সেদিক থেকে বলতে পারি, অফিসিয়ালদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, তারা সর্বাত্মক সমর্থন দেবে। আমাদের কাজ হবে, ভালো খেলে ম্যাচ জেতা।
সমকাল: সাকিবকে নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে?
সিমন্স: আমি জানি না, সাকিব বোলিং শুরু করেছে কিনা? বিষয়গুলো নিয়ে আগে নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের পরিকল্পনা জানার পর বাকি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। যে নির্দেশনা থাকবে, আমরা সেটাই অনুসরণ করব।
সমকাল: আপনি কি বাংলাদেশে বেশি থাকবেন, না সিরিজ শেষে ইংল্যান্ড ফিরে যাবেন?
সিমন্স: বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে আমাকে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করতে হবে। বেশির ভাগ সময় ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকব। জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করব। টেস্ট সিরিজ শেষে আরব আমিরাত ও পাকিস্তান যেতে হবে। হ্যাঁ, আমার বিশ্রাম এবং বিরতির প্রয়োজন হবে। নির্দিষ্ট কিছু সময় বাদ দিলে বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকব। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ ল স মন স দ ই বছর ক জ কর স মন স আম দ র সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।