Samakal:
2025-11-03@06:00:00 GMT

নৌপথে ঘরমুখো যাত্রীর ভিড়

Published: 29th, March 2025 GMT

নৌপথে ঘরমুখো যাত্রীর ভিড়

ঈদুল ফিতরে নৌপথে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালু ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ নানা কারণে নৌপথে যাত্রীখরার শঙ্কায় থাকা লঞ্চ মালিকরাও যাত্রীসেবা বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছেন। ফলে নৌপথে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।

এবারের ঈদের ছুটি বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় আগেভাগে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেন যাত্রীরা। এই অবস্থায় ঈদকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস। ফিরতি যাত্রীদের জন্য এই সার্ভিস চালানো হবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। স্বাভাবিক সময়ে যে সংখ্যক লঞ্চ চলাচল করে থাকে, তার অতিরিক্ত সংখ্যক লঞ্চ দিয়েই এই বিশেষ সার্ভিস চালানো হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত লঞ্চের সংখ্যা নির্ধারণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক সমিতির কর্মকর্তারা।

সরেজমিন রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীর আনাগোনা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। কোনো কোনো নৌরুটের যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।

ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী পারাবত-২ লঞ্চের ম্যানেজার সুমন সমকালকে বলেন, মঙ্গলবার বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু হলেও প্রথম দুইদিন তেমন ভিড় দেখা যায়নি। এরপর ঈদের ছুটি শুরুর দিন বৃহস্পতিবার থেকেই মূলত যাত্রীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। শনিবার এই ভিড় ছিল অনেক বেশি।

এদিকে ঘরমুখী মানুষের সর্বাত্মক সুবিধা নিশ্চিতে সতর্ক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আগে থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নৌপুলিশ ও আনসারসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতাও বেড়েছে। ফলে সদরঘাট ঘুরে যাত্রীদের জন্য পরিচ্ছন্ন ঘাট, ওয়াশরুম, ব্রেস্টফিডিং কর্নার এবং বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা দেখা গেল। বিভিন্ন গন্তব্যে লঞ্চগুলোকে যথা সময়ে ছাড়তে ঘাটকর্মীদেরও তৎপর হতে দেখা গেছে।

এর আগে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় দু'দফা বৈঠক করে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে নানা সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা দিয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- অতিরিক্ত যাত্রী ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা, রাজধানীর গুলিস্তান থেকে সদরঘাট যাওয়ার রাস্তায় যানজট নিরসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ঘাটে যাত্রী হয়রানি বন্ধ ও যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণ, টার্মিনাল ও লঞ্চগুলো হকারমুক্ত রাখা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ ও আনসারসহ কমিউনিটি পুলিশ মোতায়েন, বিআইডব্লিউটিএ'র কন্ট্রোলরুম চালু, যথাসময়ে লঞ্চ আসা-যাওয়া নিশ্চিত করা, নৌদুর্ঘটনা রোধে ঈদের আগের ও পরের পাঁচদিন সার্বক্ষণিক বাল্কহেড (বালুবাহী জাহাজ) চলাচল বন্ধ রাখা প্রভৃতি। গত ১৮ মার্চ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সভায় নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন নৌপথে ঈদযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে সদরঘাটসহ নৌরুটের বিভিন্ন স্পটে আকস্মিক পরিদর্শনে যাওয়ার ঘোষণাও দেন।

এরই মধ্যে ঈদে নৌপথের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চের সময়সূচি চূড়ান্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটি'র ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন জানান, ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দশনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য সদরঘাটে সকল অংশীদারের সাথে মিটিং করেছি আমরা। নৌপথের বিদ্যমান ৩৮টি রুটেই লঞ্চ চালানোর সময়সীমা নির্ধারণ করেছি। আমরা ঈদযাত্রাকে ঘিরে ১৭৫টি লঞ্চের সময়সীমা ঠিক করেছি।

তিনি বলেন, যাত্রী বাড়লে প্রয়োজনে লঞ্চ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। যাত্রীসেবা দিতে অন্য উদ্যোগগুলোও চলমান থাকবে। যাত্রীদের সচেতনতা ও দিকনির্দেশনা দিতে বন্দরকর্মীরা সার্বক্ষণিক সহায়তা দেবেন।

যাত্রী টানতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন লঞ্চ মালিকরাও। ঈদযাত্রাকে ঘিরে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে লঞ্চে যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণ, মাঝপথে যাত্রী উঠা-নামা না করানো, লঞ্চে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট ও বয়ার রাখাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নিশ্চিতে সতর্কভাবে কাজ করছেন তারা। যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি যেন না হয় সেটি নিয়েও বেশ তৎপর লঞ্চ মালিকরা।

এর আগে কোনো কোনো লঞ্চে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী এমভি মানালী অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। ঈদের আগে-পরের উভয় সময়ের টিকিট অগ্রিম বিক্রি হচ্ছে। ১৫ রমজান থেকেই অগ্রিম টিকিট ছেড়েছে তারা। অগ্রিম টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা নেই অন্য লঞ্চগুলোতে।

লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, এবারের ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় আমরা বেশি যাত্রী পরিবহন করতে পারব বলে আশাবাদী। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতে আমরা নানা ব্যবস্থা নিয়েছি। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করার বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন পথ ন শ চ ত কর ন পর বহন ব যবস থ সদরঘ ট ঘরম খ র বহন

এছাড়াও পড়ুন:

অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।

২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।

ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • ট্রাম্প কি রাজার শাসন চালাচ্ছেন