তিস্তা প্রকল্প ও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ইতিবাচক সাড়া চীনের
Published: 30th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, দেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় বহুল আলোচিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। একইসঙ্গে দেশটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রসারে চীন ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বর্তমানে চীনে পড়াশোনা করছেন। যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড.
হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, তার একটি দিক হচ্ছে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং অন্য দিকটা হচ্ছে শিল্পায়ন। এই দুটি স্তম্ভ তারা শক্ত করে প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গেছেন। এগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ হচ্ছে দুই দেশের মানুষের। তার একটি প্রধান বিষয় হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বলেছেন, আমরা এক-দুজন নয়; বরং হাজার হাজার বাংলাদেশি চাইছি যারা চীনে শিক্ষা নিতে যাবেন। আগামী এপ্রিল মাসে কুনমিং শহরের গভর্নর আসছেন। ওই সফরে শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আমরা চাইছি- যেন, বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী চীনে শিক্ষার সুযোগ লাভ করতে পারেন। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।
একইসঙ্গে দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ এবং শিক্ষার প্রসারের জন্য ঢাকা এবং চীনে দুটি কালচারাল সেন্টার স্থাপন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে ৭৫০ মিলিয়নের মতো ঋণের কথা আমরা বলছি। এর মধ্যে অর্ধেক চট্টগ্রামের চীনা শিল্পাঞ্চল উন্নয়নের জন্য। অন্যদিকে মোংলা বন্দরে আমাদের একটি আধুনিকীকরণের প্রকল্প চলছে। যেহেতু চীন মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণের কাজ করছে, এটার পাশপাশি ওখানেও একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করার চিন্তাভাবনা করছে। তারা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছেন, আমরা রাজি থাকলে সেখানে দ্বিতীয় ইকোনমিক জোন নিয়ে তারা কাজ করবেন এবং ওখানে বিনিয়োগ করবেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘চীনের ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিশ্রুতির কথা আমরা বলছি। এই অর্থ আগের সব বড় বড় অংকের থেকে একটি বড় কারণে ভিন্ন। কারণ, আগে যে বড় অংকের অর্থ নিশ্চিত করে আসা হয়েছে সেগুলো ছিল ঋণ। ঋণের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা চলে আসে, নেতিবাচক হলো, এই টাকা আমাদের ফেরত দিতে হয়। সুতরাং আমাদের অর্থনীতিতে এই টাকা ঢোকে এবং সুদসহ বের হয়ে যায়। সেই জায়গায় যদি বিনিয়োগ আসে, সেটি আমাদের অর্থনীতিতে প্রবেশ করে যায়। এই টাকা কখনও এই দেশ থেকে যাবে না। এই বিনিয়োগের ফলে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে সেটা ঋণ থেকে কখনই হয় না।’
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এবার এই ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ১ বিলিয়নের বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৩০টি চীনা কোম্পানি। এটি মূলত চট্টগ্রামের আনোয়ারাতে চীনা শিল্প ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে। প্রায় ৮০০ একর জমির ওপর এই শিল্পাঞ্চল তৈরির কাজ চলছে। এই জোনের কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছিল কিন্তু ২০২২ সালের পর এটা নিয়ে আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। গত তিন মাসে আমরা এখানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছি এবং অনেকগুলো বড় বড় সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে। তাদের সঙ্গে একটা নেগসিয়েশনে এসেছে, যে কারণে বিনিয়গকারিরা এখন খুবই কনফিডেন্ট অনুভব করছেন যে এই বছরের কোনও এক সময় আমরা নির্মাণ কাজ শুরু করবো। জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, এখন আমরা নির্মাণকাজে যাবো। সেটার ওপর নির্ভর করেই কিন্তু চীনা কোম্পানি আমাদের এখানে আসার চিন্তা করছে।’
এবারের চীন সফরে স্বাস্থ্য সেবা একটা বড় বিষয় ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১২ শতাংশের মতো এসেছে অনুদান, যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো। এর মধ্যে ১৫০ মিলিয়ন ডলার কারিগরি সহায়তার জন্য এবং ১০০ মিলিয়ন হাসপাতাল তৈরির জন্য। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে বাংলাদেশে অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি করা এবং বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য যে যাত্রা ভারত-থাইল্যান্ডের দিকে হয়, আমরা চেষ্টা করছি, যাতে চীন থেকে সেই সাপোর্ট পাওয়া যায়।’
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিষয়টি কিন্তু আমাদের জন্য বড় প্রভাব রেখেছে। আমরা অনেকদিন ধরে চীনের বিনিয়োগের কথা বলছি। চীনা বিনিয়োগের যে গুরুত্ব সেটা আমরা আবারও গিয়ে অনুধাবন করেছি। আমরা এই সুযোগ আসলে খুব কম গ্রহণ করেছি। চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা এখনও আছে কিন্তু খুব স্বল্প পরিসরে আছে। আমাদের আরও বেশি হারে চীনে যেতে হবে। চীন এমন একটি মহাদেশ, যেখান থেকে আমাদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসা সম্ভব। লাস্ট আগস্ট থেকে এই মার্চ পর্যন্ত ৩৪টি চীনা কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ-বেপজাতে। এখানে আর্থিক প্রতিশ্রুতি প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ডলারের মতো।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য আম দ র র একট
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় জুস ফ্যাক্টরিতে যৌথবাহিনীর অভিযান, লাখ টাকা জরিমানা
নারায়ণগঞ্জে অননুমোদিত শিশুখাদ্য উৎপাদনের অভিযোগে লাবনী ফুড অ্যান্ড কনজ্যুমার প্রোডাক্টস নামে একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনী।
সোমবার (১৬ জুন) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা নয়ামাটি মুসলিমপাড়া এলাকায় অভিযানটি পরিচালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ নিয়াজ শিশির, বিএসটিআইয়ের ফিল্ড অফিসার মো: আশিকুজ্জামান এবং ফতুল্লা থানা পুলিশের একটি টিম।
অভিযানে প্রতিষ্ঠানটিকে অননুমোদিত ভেজাল শিশুখাদ্য উৎপাদনের দায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় আনুমানিক চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার বিভিন্ন রকমের ভেজাল শিশু খাদ্য জব্দ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, লাবনী ফুড এন্ড কনজিউমার প্রোডাক্টস নামে কারখানাতে অননুমোদিত শিশুখাদ্য উৎপাদনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে প্রতিষ্ঠানটিকে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
বিএসটিআইয়ের ফিল্ড অফিসার মো: আশিকুজ্জামান জানান, প্রতিষ্ঠানটি ৭টি শিশু খাদ্য উৎপাদন করে থাকে। যার মধ্যে ৩টির অনুমোদন আছে এবং বাকি চারটির অনুমোদন নেই।