অনেকে পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কেউ–বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কাজের চাপ ও সুযোগের অভাবে বছরের অন্য সময় বাড়িতে ফেরা না হলেও ঈদে নাড়ির টানে বাড়িতে আসা চাই। এই ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে তাই বাস রিজার্ভ করে গ্রামে ফিরেছেন উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

গত কয়েক দিন নীলফামারীর বিভিন্ন স্থান ও রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘি এলাকায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী কিছু বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ঈদের আগে এসব বাসে করে এসেছেন কর্মজীবী মানুষেরা। ঈদ উদ্‌যাপন শেষে আবার এসব বাসেই ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কর্মস্থলে ফিরবেন তাঁরা।

ঢাকার সাভারের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত সুলতানা, সাহানা ও জোবায়দা একসঙ্গে বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁদের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর এলাকায়। বুধবার সকালে তাঁরা জানান, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে তাঁরা ৫০ জন মিলে ২৫ হাজার টাকায় বাস ভাড়া করে এসেছেন। ছুটির এই দিনগুলোয় বাসের চালক ও তাঁর সহকারী একেক দিন একেকজনের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করেছেন। থাকছেন বাসের ভেতরে। এভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদযাত্রা করা যায় বলে মনে করেন এই নারীরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে যাত্রী নিয়ে আসা এসব বাসের বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের মতো আশপাশের এলাকাগুলোয় চলাচল করে। আকাশ, ঠিকানা, উৎসব, বন্ধনসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস যাত্রী নিয়ে এসেছে। এই জনপদে প্রায় ১৫টি বাসের দেখা মিলেছে।

ঢাকার উত্তরা ইপিজেডে কাজ করেন কামারপুকুর এলাকার আরেক বাসিন্দা আসমত আলী (৩৭)। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কাজ করে সংসার চালাই। আমাদের প্রাইভেট কার নেই। তাই কয়েকজন বন্ধু মিলে বাস ভাড়া করে বাড়িতে এসেছি। বাসে চড়েই কর্মস্থলে ফিরে যাব।’ তিনি বলেন, ‘টাকা সামান্য একটু বেশি লাগলেও আরামে যাতায়াত করা যায়। তাই প্রতিবছর ঈদে এভাবে আসি এবং যাই।’

বাসের চালক তমিজ আলম ও রায়হান হোসেন ঈদযাত্রীদের নিয়ে আসতে পেরে খুবই খুশি। তাঁরা বলেন, এসব কর্মজীবী মানুষ অনেক পরিচিত। ঈদের ছুটি না কাটিয়ে তাঁদের ঢাকা থেকে নিয়ে আসেন আবার নিয়ে যান। এখানে এসে যে আপ্যায়ন ও যত্ন পান, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। অনেকটা জামাই আদর। তাঁরা বলেন, ফেরার সময় কর্মজীবীদের পরিবারের সবাই আসেন। তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তখন তাঁদেরও মনটা খারাপ হয়ে যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র এল ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল

ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।

বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।

প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।

জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে

জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সাড়ে চারটায় জামায়াত

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলন

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।

একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ