যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করলেও তাঁর এ পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে সুবিধা পেতে পারে ব্রাজিল। গতকাল বৃহস্পতিবার এমনটাই বলেছেন অর্থনীতিবিদেরা। লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির পণ্যের ওপরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।

গত বুধবার ট্রাম্পের ওই শুল্ক ঘোষণার পর দেশে দেশে শেয়ারবাজারে সূচকের পতন হলেও ব্রাজিলের স্থানীয় পুঁজিবাজারগুলো ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে। দেশটির মুদ্রা রিয়ালের মানও মার্কিন ডলারের বিপরীতে হয়েছে ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ। নতুন করে শুল্কারোপের আগে ১ ডলার সমান ছিল ৫ দশমিক ৬০ ব্রাজিলীয় রিয়াল। ডলারের বিপরীতে রিয়ালের এ অঙ্ক এখন এর নিচে নেমেছে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭% শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র০২ এপ্রিল ২০২৫

ইতিমধ্যে ব্রাজিলের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক বেড়েছে দশমিক ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে ব্রাজিলের কাঁধে তুলনামূলক কম শুল্কের বোঝা চাপানোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে, যা দেশটিকে বড় ধরনের বাণিজ্যঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার অর্থপ্রবাহের পথ পরিবর্তনকে উৎসাহিত করছে।

ব্রাজিলের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক বেড়েছে দশমিক ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে ব্রাজিলের কাঁধে তুলনামূলক কম শুল্কের বোঝা চাপানোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে, যা দেশটিকে বড় ধরনের বাণিজ্যঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার অর্থপ্রবাহের পথ পরিবর্তনকে উৎসাহিত করছে।

এক্সপির গবেষক দল বলেছে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ‘পুরোপুরি খারাপ, কিন্তু ব্রাজিলের জন্য সম্ভাবনার’। এই শুল্ক আরোপকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলে তা দক্ষিণ আমেরিকার এ বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তির (ব্রাজিল) জন্য সুবিধা বয়ে আনতে পারে। সেই সঙ্গে দেশটিজুড়ে ও বড় পরিসরে লাতিন আমেরিকার অবকাঠামো খাতে চীনের বিনিয়োগ গতিশীল হতে পারে।

এক্সপি বলেছে, চীনা বাণিজ্যযুদ্ধ সত্ত্বেও ২০১৮–২০২০ মেয়াদে চীনের সয়াবিন ও শস্যের মতো পণ্যের চাহিদা যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিবর্তিত হয়ে ব্রাজিলমুখী হয়েছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে পণ্য রপ্তানিতে বড় ধাক্কার শঙ্কা৭ ঘণ্টা আগে

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিটিজি প্যাকচুয়ালের অংশীদার ও অর্থনীতিবিদ ইয়ানা ফেরাও বলেন, যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বড় ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ তাঁদের জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, অন্যান্য দেশের ওপর শুল্কের বোঝা অনেকটা বেড়েছে। এতে ব্রাজিলের নির্দিষ্ট কিছু খাত তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পেতে পারে।’

যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বড় ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ তাঁদের জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে। অন্যান্য দেশের ওপর শুল্কের বোঝা অনেকটা বেড়েছে। এতে ব্রাজিলের নির্দিষ্ট কিছু খাত তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পেতে পারে।ইয়ানা ফেরাও, বিটিজি প্যাকচুয়ালের অংশীদার ও অর্থনীতিবিদ

ব্রাজিলের সাও পাওলোর আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভার্দে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মুখ্য বিনিয়োগ কর্মকর্তা লুইস স্টলবার্জার বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ব্রাজিলের ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক এটিই বোঝাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে শুল্কের বোঝা চাপলেও দেশটি ‘উচ্চ সুবিধা’ পেয়েছে।

আরও পড়ুনকানাডার ওপর শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের দলের ৪ সিনেটর১৬ ঘণ্টা আগেড্রোন থেকে ধারণ করা ব্রাজিলের প্যারানাগুয়া বন্দরের রপ্তানি করিডরের দৃশ্য। প্যারানা, দক্ষিণ ব্রাজিল, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প বড় ধরন র জন য স র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক সাফল্য

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কমায় একে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য।”

শুক্রবার (১ আগস্ট) এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্ক হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন, আলোচকরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নিরলসভাবে কাজ করে জটিল আলোচনাকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। যেখানে শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এই চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তাবাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি ও আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ

কোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এ অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না; বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল, উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আজকের সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও আগামী দিনের আরো শক্তিশালী অর্থনীতির সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।

 

তথ্যসূত্র: বাসস

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ