ভাগ্যশ্রীর মেয়ে অবন্তিকা দাসানি ‘মিথ্যা’ ওয়েব সিরিজ দিয়ে বিনোদনজগতে যাত্রা শুরু করেন। দার্জিলিংয়ের স্কুলছাত্রী ‘রিয়া রাজগুরু’র চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই তারকা–কন্যা। পরে তেলেগু সিনেমা ‘নেনু স্টুডেন্ট স্যার’-এর মাধ্যমে বড় পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়। এবার ‘ইন গলিয়োঁ মে’ ছবিতে অভিনয় করে অবন্তিকা বলিউডে যাত্রা শুরু করলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অবন্তিকা জানালেন, তারকার সন্তান হলেও শুরুতে তাঁর ফিল্মি সফর মোটেও মসৃণ ছিল না। এমনকি এখনো টিকে থাকা কিংবা নিজের একটা অবস্থান তৈরির জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
অনেকের ধারণা, ফিল্মি পরিবারের সন্তান মানেই তাঁদের অভিনয়জীবন খুব সহজ। তাঁরা সহজে সবকিছু পেয়ে যান। এসব ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন অবন্তিকা। তাঁর মতে, ভাগ্যই সবকিছু।

এই অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে ভাগ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, আপনার ভাগ্য কখনো সহায় হবে, কখনো হবে না। আর এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের এমন কিছু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়, যা মানুষের বিশ্বাসই হয় না।’ তিনি জোর গলায় বললেন, ‘অনেকেই মনে করেন যে আমাদের মা-বাবা ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন, তাই আমরা সহজেই কাজ পেয়ে যাই। কিন্তু এটা ভুল ধারণা, ভুল! আমি যে কতবার অডিশন দিয়েছি আর কতবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছি, সে সংখ্যা আমার মনেও নেই। আরে, এসব তো প্রতিদিনই আমার জীবনে ঘটতে থাকে। তা সত্ত্বেও আমি আশায় থাকি যে একদিন হয়তো ভালো কোনো কাজ পাব। আর যেখানে আমি দেখাতে পারব যে সত্যি আমার প্রতিভা আছে কি না, নিজেকে প্রমাণ করতে পারব।’

মা ভাগ্যশ্রীর পথ অনুসরণ করে অভিনয়জগতে এসেছেন অবন্তিকা। মায়ের দেওয়া একটা মূল্যবান পরামর্শ সব সময় মনে রাখেন তিনি। ‘মাম্মা একটা কথা সব সময় বলেন, সংলাপ বলার সময় বা কোনো অ্যাকশন করার সময় আমার ভেতরের আবেগ যেন আমার চোখে ফুটে ওঠে। আমার চোখে যদি সেটা ধরা না পড়ে, তাহলে তার কোনো মানেই হয় না। চোখে যেন দৃশ্যের সত্যতা প্রকাশ পায়। মাম্মা আমার অডিশন টেপ করার সময় কখনো কখনো বলেন যে আমার চোখে আবেগ ধরা পড়ছে না, আবার যেন করি। মাম্মার কাছ থেকে পাওয়া এটাই আমার সবচেয়ে বড় শিক্ষা,’ বললেন অবন্তিকা।

ছোটবেলায় কখনো অভিনেত্রী হতে চাননি অবন্তিকা। লন্ডনে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আর মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। করপোরেট জগতে কাজ করতেন। কিন্তু অবন্তিকার ভেতরে লুকিয়ে থাকা শিল্পীসত্তা তাঁকে সব সময় বিনোদনজগতে টানত। আর তাই করপোরেট জীবন মোটেও উপভোগ করতেন না তিনি।

অবন্তিকা বলেন, ‘ছোটবেলায় আমাকে সবাই বলতেন যে আমি অভিনয়ই করব। আর এ কথা শুনে আমি খুব বিরক্ত হতাম। আমি চাইতাম না যে আমাকে একটা বাক্সে বন্দী করা হোক। তাই অভিনয় থেকে দূরে পালাতাম। কিন্তু আমি আমার চাকরিজীবন মোটেও উপভোগ করছিলাম না। অভিনয়ের প্রতি এক টান আমি অনুভব করতে শুরু করলাম। তাই আমি অভিনয়ের ওয়ার্কশপ করা শুরু করি। আর অভিনয়ের প্রতি আমার ভালোবাসা জন্মায়।’

গত ১৪ মার্চ মুক্তি পাওয়া ‘ইন গলিয়োঁ মে’ সিনেমাটি লক্ষ্ণৌ শহরের পটভূমিতে নির্মিত। এ সিনেমায় ভিভান শাহ ও অবন্তিকা দাসানি দুই সবজি বিক্রেতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবন ত ক আম র চ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত ৪, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট। পরে বিবিসি আরেকজন নিহতের খবর দেয়। এতে নতুন হামলায় চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ