আপনাদের অনেক আগেই বিএনপি সংস্কারের দাবি করেছে: নজরুল ইসলাম খান
Published: 6th, April 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন নতুন সংস্কার করেছে, গণমুখী উন্নয়ন করেছে। বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে উন্নয়নের রাজনীতি, জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি, উৎপাদনের রাজনীতি। সেই বিএনপিকে সংস্কারের বিরোধী বলা হচ্ছে। যাঁরা বলেন, আমি তাঁদের এই মাঠে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ করছি। বিএনপি যখন সংস্কারের দাবি করেছিল তখন আপনারা তো দন্তস্যও উচ্চারণ করেননি। আপনাদের অনেক আগেই বিএনপি সংস্কারের দাবি করেছে।’
আজ রোববার বিকেলে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে সদ্য কারামুক্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান এ কথাগুলো বলেন। উপজেলার সরকারি সূতি ভিএম পাইলট মডেল হাইস্কুল মাঠে এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৫ সালে ভিশন ২০৩০, বিএনপি ২০২২ সালে ২৭ দফা এবং ২০২৩ সালের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের পরামর্শক্রমে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। আজকের এই সরকার যতগুলো সংস্কারের জন্য কমিটি করেছে, যতগুলো প্রস্তাব করেছে, একটা বের করেন, যেটা আগেই বিএনপির পক্ষ থেকে করা হয়নি। আমরাই প্রথম সংস্কারের কথা বলেছি, আমরাই প্রথম ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছি।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছরের লড়াই–সংগ্রাম ও গত জুলাই–আগস্টের সংগ্রামে সব শহীদের রক্ত বৃথা হয়ে যাবে, যদি পতিত স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে চিরতরে উৎখাত করতে না পারি। সেই তাদেরকেই কিছু টাকার লোভে, নিজের দল ভারী করার লোভে যদি আশ্রয় দেন; মনে রাখবেন, তাঁরাই শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছেন। কেউ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আবদুস সালাম বলেন, দেশ নিয়ে আজ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর পেছনে আছে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তাঁর দল। এসব ষড়যন্ত্র রুখতে হলে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম। বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম ওবায়দুল হক, মোহাম্মদ আলী ও সাঈদ সোহরাব, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দুর্জয় হোড় প্রমুখ।
আবদুস সালাম পিন্টুর নির্বাচনী এলাকা গোপালপুর। তিনি এ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় নিম্ন আদালতে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়। পরে উচ্চ আদালতের আদেশে বেকসুর খালাস পান তিনি। কারামুক্ত হয়ে ১৭ বছর পর রোববার প্রথম গোপালপুরে আসেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম খ ন র র জন ত ই ব এনপ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।