মানিকগঞ্জে পদ্মা নদীর হরিরামপুর উপজেলার অংশে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন থেকে ধূলশুরা ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নদীর মাঝে জেগে উঠেছে বড় আকৃতির চর। পানি কমে যাওয়ায় জেগে ওঠা এসব চর এলাকা দিয়ে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। 

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, প্রায় পঞ্চাশ দশক থেকে পদ্মা নদী ভাঙনে এ উপজেলা দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। উপজেলা সদর থেকে পদ্মা নদীর ওপারে তিনটি ইউনিয়ন আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জ দুর্গম চরাঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। উপজেলা সদরের সাথে চরাঞ্চলবাসীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ইঞ্জিনচালিত নৌকা। 

উপজেলার বাহাদুরপুর, আন্ধামানিক ও ধুলশুড়া খেয়াঘাট থেকে চরাঞ্চলের লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর, হরিণাঘাট, সুতালড়ী ও আজিমনগরের হাতিঘাটা এলাকায় প্রায় ৫০টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শতশত মানুষ ট্রলারে যাতায়াত করে। কিন্তু প্রতিবছরই শীত মৌসুমের শুরুতেই নদীর নাব্য সংকট দেখা দেয়। নদীর বুকে অসংখ্য ডুবোচরসহ বড় বড় চর জেগে ওঠায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ, বাল্কহেডসহ অন্যান্য নৌযানগুলোও অনেক সময় আটকা পড়ে যায়। 

সেলিমপুর এলাকার নওজেশ মোল্লা বলেন, “এমনিতেই উপজেলা ও জেলা শহর থেকে চরাঞ্চলের মানুষের পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। তারমধ্যে ডুবোচর জেগে ওঠায় নৌযানগুলো ঠিকমতো চলতে পারছে না। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে চরাঞ্চলের রোগীরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।” 

আন্ধারমানিক খেয়াঘাটের মাঝি হাশেম বলেন, “প্রতি বছর আমাদের এই পয়েন্ট ডুবোচর জেগে ওঠায় চরাঞ্চলে আমাদের ট্রলার চালাতে সমস্যা হয়। অনেক এরিয়া ঘুরে যেতে হয়। এতে আমাদের সময় অপচয়ের পাশাপাশি তেল খরচ অনেক বেশি লাগে। আমাদের ইজারাদারদের টাকা কিন্তু ঠিকই দেওয়া লাগে। এ সমস্য দূর করতে নদীর মাঝ দিয়ে খনন করা জরুরি।”

আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন চৌধুরী বিপ্লব বলেন, “নাব্য সংকটে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন আমাদের সদর এলাকা থেকে দুর্গম চরাঞ্চলে যাতায়াত করতে হয়। নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠায় অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। অনেক সময় ট্রলার ডুবোচরে আটকেও যায়। তাই পরিকল্পিতভাবে সঠিক উপায়ে নদীর মাঝ দিয়ে ড্রেজিং করে নৌপথ সচল করা জরুরি।”

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান খান বলেন, “মানিকগঞ্জ জেলায় পদ্মা নদীর অংশ প্রায় ৩০ কিলোমিটার যাহা হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলার পার্শ্ব দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। প্রতিনিয়ত পদ্মা নদীতে প্রচুর পরিমাণ সেডিমেন্ট অর্থাৎ পলি জমা পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর বা চর পড়ছে। ফলশ্রুতিতে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে। মানিকগঞ্জের অংশে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ইতোমধ্যে জরিপ কাজ চলমান রয়েছে এবং একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ডুবোচর বা চর অপসারণের জন্য যেন ড্রেজিংয়ের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হবে।”

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ আম দ র র এল ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাকিমপুর সীমান্ত থেকে আটক ১৫ বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়। 

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তথ্য সহায়তার আহ্বান বিজিবির

ফিরিয়ে আনা বাংলাদেশিদের মধ্যে আটজন নারী, দুইজন পুরুষ ও পাঁচজন শিশু। তারা সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বাসিন্দা। তাদের রাতে সাতক্ষীরা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। 

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত পার হওয়ার সময় বাংলাদেশি নাগরিকরা বিএসএফের কাছে আটক হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গ্রামের মো. শাহীন সানা, তার স্ত্রী নিলুফা ও কন্যা শাহিনা সুলতানা, একই উপজেলার নওয়াবেকি গ্রামের মিস সুরাইয়া ইয়াসমিন, মোছা. রাবিয়া বেগম, বড়কুপট গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, লিপিকা খাতুন, নাজমা খাতুন, জিম তরফদার, বয়ারসিং গ্রামের মোছা. ফারহানা আক্তার ও তার ছেলে ফারহান ঢালী, উত্তর আটুলিয়া গ্রামের সেমিনা খাতুন, আশাশুনি উপজেলার হিজলিয়া গ্রামের রাবিয়া খাতুন ও রিয়াদ হাসান এবং সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ফুলমতি খাতুন।

সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামিনুল হক বলেন, “ভারতের হাকিমপুর সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিএসএফের হাতে আটক হন। পরবর্তীতে বিএসএফের আমুদিয়া কোম্পানি কমান্ডার বিকাশ কুমার সাতক্ষীরার তলুইগাছা কোম্পানি কমান্ডার আবুল কাশেমের নিকট পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এসব বাংলাদেশিদের হন্তান্তর করেন।”

তিনি আরো বলেন, “বিজিবি ফেরত আনা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সাতক্ষীরা থানায় হন্তান্তর করেছে। পরিচয় যাচাই শেষে তাদের পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর