সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সংবাদ সংগ্রহের সময় তপন কুমার বিশ্বাস ও সাহেব আলী নামে দুই সাংবাদিককে জামায়াত নেতাকর্মীরা লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুর একটার দিকে উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি নীলডুমুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ নিয়ে বন বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে তারা এমন ঘটনার শিকার হন। তপন কুমার এশিয়ান টিভির সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি। সাহেব আলী দৈনিক প্রবর্তন পত্রিকার শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।

তপন কুমার জানান, সম্প্রচার হওয়া একটি সংবাদ নিয়ে বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন জামায়াতের নায়েবে আমির নজরুল ইসলাম ক্ষুব্ধ ছিলেন। সোমবার বন বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নীলডুমুর রেঞ্জ কার্যালয়ে গেলে নজরুল ইসলামসহ ১০ থেকে ১২ জন তাদের লাঞ্চিত করেন। এ সময় বুড়িগোয়ালীনির ৮ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াত নেতা আব্দুল জলিল মেম্বর, দিদারুল ও হাফেজ শহিদুল ইসলাম ধাক্কা দিয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাসহ তাদের মারধর করতে উদ্যত হন। অন্য সংবাদকর্মীরা এগিয়ে গেলে তাদের সঙ্গেও দিদারুল, জলিলরা দুর্ব্যবহার করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। 

অভিযোগের বিষয়ে নজরুল ইসলাম জানান, মানহানিকর একটি নিউজ নিয়ে সমস্যা হলেও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নেতারা দেখছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি দাবি করে তিনি বলেন, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আগের একটি বিষয় নিয়ে উত্তেজিত হওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি নিবৃত্ত করায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল জানান, উপজেলা জামায়াতের আমির ঘটনাটি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রহমান জানান, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করে থাকলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য মনগর ল ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।

অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল