বাকৃবি কেন্দ্রে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কক্ষ খুঁজতে প্রয়োজন ৩ ক্লিক
Published: 9th, April 2025 GMT
আগামী ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কৃষি গুচ্ছের ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। দেশের নয়টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। ৩ হাজার ৮৬৩ আসনের বিপরীতে আবেদন এ বছর লড়বেন ৯৪ হাজার ৩৬ জন শিক্ষার্থী।
ভর্তিযুদ্ধের আগে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিড়ম্বনার কথা মাথায় রেখে গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো থাকবে ‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’ ওয়েব মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কেন্দ্রের আওতায় থাকা পরীক্ষার্থীদের হলের অবস্থান ও সেখানে যাওয়ার সহজ পথ দেখা যাবে।
‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’ নামের ওই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে মাত্র তিনটি ক্লিকেই পরীক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষার হলের লোকেশন জানতে পারবেন। অ্যাপে রোল নম্বর ও কক্ষ নম্বর ইনপুট দিলেই জিপিএস এবং গুগল ম্যাপের সাহায্যে অ্যাপটি পরীক্ষার হলের দিকনির্দেশনা দেবে। ওয়েব অ্যাপটি ব্যবহার করতে লিংকটি ব্যবহার করতে হবে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অ্যাপটির হালনাগাদ সংস্করণের উদ্বোধন করা হয়।
আইসিটি সেল ও কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের সার্বিক সহযোগিতায় এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ অ্যাপটি হালনাগাদ করা হয়েছে। অ্যাপটি নিয়ে কাজ করেছেন বায়োইনফরমেটিকস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক হাওলাদার, তৃতীয় বর্ষের মুহাম্মদ ইশমামুল হক ও দ্বিতীয় বর্ষের মো.
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. জয়নাল আবেদীন, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল আওয়াল, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মেছবাহ উদ্দিন।
অ্যাপ উদ্ভাবক দলের সদস্য অনিক হাওলাদার বলেন, “আমরা আগেও এ অ্যাপটি তৈরি করে ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। পরীক্ষার দিন অনেকেই কক্ষ খুঁজে না পেয়ে হতাশায় পড়েন। তাই নতুন কেন্দ্রগুলোর তথ্য ও বর্তমান পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাপটি আপডেট করেছি।”
তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত অ্যাপটি শুধু বাকৃবি কেন্দ্রের জন্য কাজ করছে। তবে আমরা চাই, কৃষি গুচ্ছভুক্ত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের মতো করে স্থানীয়ভাবে প্রতিনিধি নিয়োগ হোক। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে ভবিষ্যতে অ্যাপটি গুচ্ছভুক্ত সব কেন্দ্রের জন্য উপযোগী করে তুলতে চাই।”
“অ্যাপে প্রবেশ করা যাবে ওয়েবলিংক কিংবা কিউআর কোড স্ক্যান করে। অ্যাপটির মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি কক্ষ খুঁজে না-পাওয়ার দুশ্চিন্তাও দূর হবে,” -যুক্ত করেন অনিক।
অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী বলেন, “ভর্তি পরীক্ষার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পক্ষ থেকে একটি সহযোগিতা বুথ খোলা থাকবে। সেখানে প্রবেশপত্র সংক্রান্ত বা টেকনিক্যাল জটিলতা সমাধানে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাওয়া যাবে।”
অধ্যাপক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্ভাবনী দক্ষতা দিয়ে যেভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি ভর্তিচ্ছুদের মানসিক চাপ অনেকটাই কমিয়ে দেবে।”
এর আগেও বাকৃবির এ শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাডমিশন রোডম্যাপ’ নামের আরেকটি অ্যাপ তৈরি করেছিলেন, যা নবীন শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে নির্দেশনা দিয়ে সহজ করে তোলে। এবার ‘এক্সাম হল ফাইন্ডার’ অ্যাপের হালনাগাদ সংস্করণ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পরীক্ষার দিনটিকেও করে তুলবে আরো বেশি সহজ।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র থ বর ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।