স্কুল মাঠে সড়ক নির্মাণসামগ্রী খেলাধুলা-হাঁটাচলায় ব্যাঘাত
Published: 10th, April 2025 GMT
নান্দাইল উপজেলার বরুণাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে পাশের একটি সড়ক পাকাকরণের সামগ্রী। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঠে খেলাধুলা দূরের কথা, স্বাভাবিক হাঁটাচলা করতেই বিড়ম্বনা হচ্ছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নেননি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে শুরুতেই কাজ বন্ধ রেখেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের সর্বদক্ষিণে বরুণাকান্দা গ্রামের উত্তরের সীমানা থেকে দক্ষিণে ৫০০ মিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন প্রায় ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দের কাজটি পেয়েছেন ‘বাপ্পী ট্রেডার্স’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেটি কিনে কাজ করাচ্ছেন স্থানীয় আলম নামে অন্য একজন ঠিকাদার। রাস্তার মাটি গর্ত করে সুরকি ও বালু ফেলার জন্য সেসব নির্মাণসামগ্রী বরুণাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্তূপ করে রাখেন। গত ঈদুল ফিতরের আগে নিম্নমানের সুরকি ও বালু ফেলার উদ্যোগ নিলে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পর থেকে বন্ধ রয়েছে রাস্তা পাকাকরণ কাজ। ফলে সুরকি ও বালু বিদ্যালয়ের মাঠেই পড়ে রয়েছে।
গত সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে সুরকি ও বালুর স্তূপ। বালুর স্তূপের ওপর দৌড়াদৌড়ি করছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিম ও পাপিয়া জানায়, ঈদের পর বিদ্যালয় খোলা হলে তারা এসে মাঠের এ অবস্থা দেখতে পায়।
এ সময় শিক্ষার্থী অভিভাবক আসমুদ্দিন জানান, মাঠে এসব রাখা মোটেও উচিত হয়নি। বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির নূরুল ইসলামের ভাষ্য, বালু ও সুরকি নিম্নমানের হওয়ায় শুরুতেই কাজে বাধা দিয়েছেন তারা। তা ছাড়া বালু ও সুরকির পরিমাণ সমান অনুপাতে দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারের লোকজন সুরকির দ্বিগুণ বালু ব্যবহার করছিলেন। এর পর থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিনা বেগম জানান, ঠিকাদার বিদ্যালয়ের মাঠে এসব রাখলেও তাঁকে কিছু জানাননি। ঈদের ছুটিতে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে বিদ্যালয়ে এসে তিনি মাঠের এ অবস্থা দেখতে পান। প্রায় এক মাস ধরে রাস্তার নির্মাণসামগ্রী স্কুল মাঠে রাখা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল অফিস বিষয়টি জানে না বলে জানা গেছে।
ঠিকাদার আলম বলেন, তিনি ৬৫ লাখ টাকায় কাজটি কিনে নিয়েছেন। বিদ্যালয় ছুটি থাকার সময় প্রধান শিক্ষকের স্বামীর কাছে বলে মাঠে কয়েকদিনের জন্য নির্মাণসামগ্রী রেখেছিলেন। বাধা দেওয়ার কারণে বালু ও সুরকি সড়কে ফেলা যাচ্ছে না। তবে দু-এক দিনের মধ্যে মাঠটি খালি করে দেবেন বলে জানান তিনি। নিম্নমানের সামগ্রীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল অফিস দেখে উপযুক্ত মনে করলেই তা ব্যবহার করবেন, অন্যথায় নয়।
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, স্কুল মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখার বিষয়টি জানেন না তিনি। তার পরও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বলে দেবেন, মাঠ থেকে দ্রুত নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর পরিবর্তে নতুন করে ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী এনে ব্যবহার করতে বলবেন। এ ছাড়া রাস্তাটি পরিদর্শন করে কোনো অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ব যবহ র কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?