ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুই অপ্রীতিকর ও অদ্ভুতুড়ে আউট নিয়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ‌্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের দুই ওপেনার ব‌্যাটসম‌্যান মিনহাজুল আবেদীন ও আলিফ হাসানের আউট নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি)। এজন‌্য তদন্তে নামছে বিসিবির অ‌্যান্টি-করাপশন ইউনিট (এসিইউ)।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের আয়োজক সিসিডিএমের সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল রাইজিংবিডিকে এ তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন।

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ম‌্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিসিবির দুই ক্রিকেটারের আপ্রোচ ও আউটের ধরন নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় এসিইউ নিজেরাই তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়ে শাইনপুকুরকে ৫ রানে হারিয়ে জয় তুলে নিয়ে ১৩ পয়েন্টে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গেছে গুলশানের। কিন্তু শাইনপুকুরের দুই ব্যাটসম্যানের চরম হতশ্রী আউটে উঠেছে প্রশ্ন।

ইনিংসের ৩৬তম ওভারে নিহাদ উজ জামানের বলে ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে আসেন রহিম আহমেদ। বল ছিল অফস্টাম্পের বাইরে। ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মাঝ বরাবর। টার্ন মিস করলেও বল খেলার কোনো চেষ্টা ছিল না তার। বরং ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে পেছনে না ফিরে ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা দেন।

ইনিংসের শেষ দিকে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান প্রয়োজন ছিল শাইনপুকুরের। হাতে কেবল ১ উইকেট। নাঈম ইসলামের করা প্রথম বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির। বল তখন ওয়াইড হয়েছে। শট খেলার কোনো চেষ্টাই করেননি মিনহাজুল। হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়েন। পরবর্তীতে ক্রিজে ব্যাট রাখার যথেষ্ট সময় পেলেও করেননি।

উইকেটকিপার ইমন প্রথম দফায় চেষ্টা করেছিলেন স্ট্যাম্প ভাঙার। কিন্তু পারেননি। ওই সময়ে ব্যাট ক্রিজের বাইরে রেখে পুরোটা সময় তাকিয়ে ছিলেন ব্যাটসম্যান মিনহাজুল। পরবর্তীতে স্ট্যাম্প ভাঙলে আম্পায়ার আউট দেন। ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ ব্যাটসম্যানের এমন আউটে রীতিমত তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গন।

ক্রিকেটার শামসুর রহমান মিনহাজুলে আউটের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘সিরিয়াসলি শেইম…!’। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম‌্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস লিখেছেন, ‘ছি!!!।’

সাব্বির আহমেদ বলেছেন, ‘‘শুনেছি বিসিবি এসিইউকে জানিয়েছে দুইটি আউট নিয়ে তদন্ত করতে। আমরা প্রত‌্যেকেই দেখেছি মাঠে কি হয়েছে। এগুলো ম‌্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের রিপোর্টের ভিত্তিতে কাজ হয়ে থাকে। তারা নিশ্চয়ই ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হবেন। এছাড়া সিসিডিএম থেকেও বিসিবির অ‌্যান্টি করাপশন ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এসিইউ এটা নিয়ে কাজ করবে।’’

সুপার লিগ নিশ্চিত করতে গুলশানের জন‌্য এই ম‌্যাচটি জেতা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শাইনপুকুরকে ৫ রানে হারিয়ে তারা ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চলে গেছে সুপার লিগে। এছাড়া শাইনপুকুরের পাওয়ার ছিল। তারা জিতলে রেলিগেশন বাঁচাতে কিছুটা এগিয়ে যেতে পারত।

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব য টসম য ন শ ইনপ ক র আউট ন য় তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে। 

গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।  

পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা। 
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়। 
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।  
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। 
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একটি টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তদের দুটি উচ্চতর গ্রেড পেতে আইনি বাধা কাটল
  • আট অঞ্চলে বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত
  • বাবার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
  • নতুন পোপ নির্বাচনের সমাবেশ শুরু ৭ মে
  • আগামী নির্বাচনে ইসি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে চায়: সিইসি
  • ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
  • ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
  • ‘বেগম’ রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ধারণ করেছে
  • পরবর্তী পোপ নির্বাচন কীভাবে