রাজস্ব আহরণে আমাদের ওপর চাপ বাড়ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
Published: 10th, April 2025 GMT
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণে আমাদের ওপর চাপ বাড়ছে। রাজস্ব বাড়াতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের যৌক্তিকভাবে কর বাড়াতে হবে। বাজেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, এবার তেমনটি হবে না। সিগনিফিকেন্ট বাজেট হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে প্রাক বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে এনবিআরকে আয়কর বিষয়ে ১৯টি, ভ্যাটের ওপর ৪০টি এবং শুল্ক সংক্রান্ত ৫৫টি প্রস্তাব দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব বাজেট। বাজেটকে জনবান্ধব করতে ব্যবসায়ীসহ সকলের মতামত নেওয়া হচ্ছে, যার প্রতিফলন পাওয়া যাবে বাজেটে। আগামী বাজেটে ঘাটতি থাকবে কিন্তু যাতে মূল্যস্ফীতি না হয় সেই দিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। আর রাজস্ব আদায়ে যৌক্তিকভাবে বাড়ানো হবে করহারও। মার্কিন শুল্ক আরোপের ফলে দেশের পোশাকখাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। ব্যবসায়ীরা যাতে এনবিআর অফিসে ঘুরতে না হয় সেজন্য সবকিছু অটোমেশন করা হচ্ছে। এখন সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে এক লাখ ৬০ হাজার সার্টিফিকেট অনলাইনে প্রদান করা হয়েছে। আয়করের মতো ভ্যাটও যেন ঘরে বসে দেয়া যায় সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে ভ্যাট হার যৌক্তিকীকরণ, ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ট্যাক্স রেট কমানো, ট্যাক্সনেট বৃদ্ধি ও রিফান্ড ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হবে।’
মো.
তিনি বলেন, ‘কর প্রদানে আমরা এরইমধ্যে অনেকদূর এগিয়ে গেছি। এখন কর দিতে কোনো ব্যাংকে যেতে হবে না। এর ফলে কমিশন খরচ হবে না। সরকারি কোষাগারে টাকা জমানো হবে সরাসরি। ভ্যাট ও আয়করে অডিট সিলেকশনে ব্যক্তি জড়িত থাকবে না এমন কাজ করছি আমরা। এর ফলে মাঝখানে কেউ প্রতারণা করার সুযোগ পাবে না। যারা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, দেশের জন্য কর্মসংস্থান করছেন তারাই রিয়েল হিরো। সরকার ১৫ লাখ মানুষকে চাকরি দিয়েছে। বাকি অনেক বড় অংশের চাকরি কিন্তু বেসরকারি খাতে।’
চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু তাহের, রাঙামাটি চেম্বারের মামুনুর রশিদ, উইম্যান চেম্বার সভাপতি আবিদা মোস্তফা, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী প্রমুখ।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এবার বাজেটে আমাদের প্রত্যাশা বেশি। রপ্তানিবান্ধব বাজেট চাই আমরা। আমরা রপ্তানি করে দেশ সমৃদ্ধ করতে চাই, কর্মসংস্থান করতে চাই। এ সময় তারা অন্যান্য দেশের তুলনায় পণ্য রপ্তানিতে বিমান ভাড়া কয়েকগুণ বেশি, বিভিন্ন খাতে এখনও ভ্যাটের পরিমাণ বেশিসহ নানা ব্যাপারে অভিযোগ তথ্য তুলে ধরেন। ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণ ও রপ্তানি বাড়াতে গ্রহণযোগ্য উদ্যোগ নেওয়া দাবিও জানান ব্যবসায়ীরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর ব যবস য় ক জ কর আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আয়কর রিটার্নে ভুল হলে কীভাবে ঠিক করবেন
বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, ভুল হতেই পারে। করের হিসাবেই বেশি ভুল হয়। কর রেয়াতের হিসাবেও ভুল করেন অনেক করদাতা। এ ছাড়া করদাতারা এমনিতেই আয়কর নিয়ে ভয় ও শঙ্কায় থাকেন।
যদি কোনো কারণে রিটার্ন ভুল হয়ে যায়, তাহলে আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। আপনি রিটার্ন জমার পরও তা সংশোধন করতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এবার দেখা যাক, কীভাবে রিটার্নের ভুল সংশোধন করবেন।
তিন ভুল সংশোধন করা যাবে
রিটার্নে তিন ধরনের ভুল সংশোধন করা যাবে। রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতার কাছে প্রতীয়মান হয় যে তাঁর প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত হয়নি বা সঠিক অঙ্কে পরিশোধিত হয়নি, তাহলে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। যেসব ভুল সংশোধন করা যাবে, তা হলো—১. প্রদর্শিত আয়, ২. দাবি করা কর অব্যাহতি বা ক্রেডিট ও ৩. অন্য যেকোনো যৌক্তিক কারণে ভুল।
যাঁরা ভুল সংশোধন করতে পারবেন না
রিটার্নে তিন ধরনের কারণে ভুল সংশোধন করা যাবে না। এগুলো হলো—১. রিটার্ন দাখিল করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন শেষ হওয়ার পর, ২. সংশোধিত রিটার্ন প্রথমবার দাখিলের পর ও ৩. মূল রিটার্নটি নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর।
অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন
করদাতাদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন জমার সুবিধা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংশোধন অপশন ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনী রিটার্নে যদি করের পরিমাণ বাড়ে, তাহলে নিয়ম অনুসারে বাড়তি করসহ জরিমানা দিতে হবে।
যেসব করদাতা অনলাইনে মূল আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর ভুলত্রুটির কারণে অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে চান, তাঁদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু আছে। যাঁরা সংশোধন অপশন ব্যবহারের জন্য অনলাইনে প্রবেশ করবেন, তাঁদের অবশ্যই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
আয়কর দিবস–পরবর্তী সময়েও বছরব্যাপী অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সুবিধাও চালু আছে।
সরাসরি রিটার্ন দাখিল
আয়কর আইনে কর কার্যালয়ে গিয়েও ভুল সংশোধনী রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কোনো করদাতা রিটার্ন দেওয়ার পর যদি দেখেন যে অনিচ্ছাকৃত ভুলে রিটার্নে কম আয় দেখিয়েছেন, কম কর পরিশোধ করেছেন কিংবা বেশি কর রেয়াত, কর অব্যাহতি বা অন্য কোনো কারণে কম কর পরিশোধ করেছেন। হিসাবের ভুলেও এমন হতে পারে। তাহলে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে এই রিটার্ন জমা দিতে হয়।
আপনি ভুল সংশোধনী রিটার্ন জমার পর উপকর কমিশনার যদি সন্তুষ্ট হন যে সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে, তাহলে তিনি রিটার্নটি গ্রহণ করবেন। প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ দেবেন।