ঝিনাইদহে ছাত্রদল নেতাসহ কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর, মালামাল লুট
Published: 11th, April 2025 GMT
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বাড়িগুলো থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার কোলাবাজারে বিএনপি নেতা বাবলুর রহমানের ফার্নিচারের দোকানে হামলা চালান নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তার লোকজন। তারা দেশী অস্ত্র দিয়ে বাবলুর রহমান ও তার ভাইপো আফাঙ্গীরকে জখম করে। এ ঘটনার জেরে কোলাবাজারে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল হয়। সেখান থেকে হামলাকারীদের আটকের দাবি করা হয়। মিছিলে অংশ নেন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বনি।
আরো পড়ুন:
জামিন: জেল গেটে হামলার শিকার সাবেক এমপি আব্দুল আজিজ
লক্ষ্মীপুরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের জেরে ১৫ বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোলা গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, “শুক্রবার সকালে বনিদের বাড়িতে প্রায় ২০০-৩০০ লোক হামলা চালায়। তাদের হাতে দা ছিল। তারা আরো কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। যারা এসেছিল তারা অন্য ইউনিয়নের মানুষ। এক ইউনিয়নের মানুষ অন্য ইউনিয়নে এসে হামলা চালাচ্ছে। এ সময় বাজারে পুলিশ ছিল।”
কোলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বনি বলেন, “বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিল করায় ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক আওয়ামী লীগ ও বর্তমানে বিএনপি নেতা দাবি করা নজরুল ইসলাম মোল্লা ও আলাউদ্দীন আলার নেতৃত্বে প্রায় ২৫০-৩০০ লোক আমার বাড়িতে হামলা চালায়। তাদের সবার হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এসময় একটি মোটরসাইকেল ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা লুট হয়।”
তিনি আরো বলেন, “যুবনেতা জলিল আহমেদের বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
জুবায়ের বনির মা শেখা খাতুন জানান, অনেক মানুষ অতর্কিত হামলা চালায় বাড়িতে। এ সময় তার স্বামী ও দুই ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগের সময়ও স্বামী-সন্তানদের পালিয়ে থাকতে হয়েছে, এখনো তাদের পালাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে নজরুল ইসলাম মোল্লার মোবাইলে ফোন কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল অভ য গ ছ ত রদল র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস