পিএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচে লাহোরের একাদশে নেই রিশাদ
Published: 11th, April 2025 GMT
পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দশম আসরের পর্দা উঠেছে শুক্রবার। টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেই মাঠে নেমেছে লাহোর কালান্দার্স, দলটির স্কোয়াডে আছেন বাংলাদেশের লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। তবে উদ্বোধনী ম্যাচেই হতাশ করেছেন লাহোর টিম ম্যানেজমেন্ট—একাদশে জায়গা পাননি রিশাদ।
রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের মুখোমুখি হয়েছে শাহিন আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন লাহোর কালান্দার্স। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাদাব খানের ইসলামাবাদ।
বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার এবার খেলছেন পিএসএলে, তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহও এবারের আসরে একটু বেশি। যদিও রিশাদ একাদশে না থাকায় কিছুটা হতাশার সুর রয়েছে ভক্তদের মাঝে।
এবারের আসর ঘিরে বাড়তি আয়োজন করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। প্রযুক্তিগত দিকেও আনা হয়েছে বেশ কিছু নতুনত্ব। ম্যাচ অফিসিয়ালদের জন্য থাকছে উন্নত প্রযুক্তি, রিয়েল টাইম ডিআরএস মাল্টিস্ক্রিন রিপ্লে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে নো বল শনাক্তকরণ ব্যবস্থা।
যদিও আইপিএলে বিশ্ব ক্রিকেটের বড় তারকারা খেলেন, তবে পিএসএলও পিছিয়ে নেই বিদেশি তারকায়। এবারের আসরে খেলছেন ডেভিড ওয়ার্নার, মোহাম্মদ নবী, স্যাম বিলিংস, ড্যারিল মিচেলদের মতো তারকারা। পাঁচ সপ্তাহব্যাপী এই আসরের ৩৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে চারটি ভেন্যুতে। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সোয়া ছয় কোটি টাকা।
লাহোর কালান্দার্স: ফখর জামান, আব্দুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ নাইম, ড্যারিল মিচেল, স্যাম বিলিংস, সিকান্দার রাজা, ডেভিড ভিসে, শাহীন আফ্রিদি, জাহানদাদ খান, হারিস রউফ, আসিফ আফ্রিদি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প এসএল
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন