Samakal:
2025-11-03@19:15:44 GMT

সোলেমানি বৈশাখ...

Published: 11th, April 2025 GMT

সোলেমানি বৈশাখ...

আনন্দে সোলেমানের মুখ ঝলমল করছে। একটি বড় ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে রতনপুর বৈশাখী মেলার মাঠে। চারদিকে বাজছে মাদল। বাঁশির শব্দ ঘুমন্ত রতনপুরকে জাগিয়ে তুলেছে। গত বছরের শেষে সোলেমান এ গ্রামের খোরশেদ মিয়ার বাড়িতে কাজ নিয়েছে। বয়স পনেরো বা ষোলো। মালিকের সঙ্গে সোলেমান বৈশাখী মেলায় এসেছে। আগ্রহ নিয়ে বৈশাখী মেলার মাটির খেলনা দেখছে সোলেমান। মনিবের ভারী কণ্ঠ শুনতে পেলো সোলেমান। তিনি বললেন, ‘তোর এতো কষ্ট করা লাগতো না। এই চিড়া-বাতাসা নিয়া বাড়ি যা।’ 
সোলেমান কিছু বলার আগে খোরশেদ মিয়া আরো কিছু ব্যাগ চাপিয়ে দিলেন। সোলেমান দ্রুত হাঁটতে গিয়ে মাঝরাস্তাতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। চিড়া-বাতাসার ব্যাগটা আরও ভারী হওয়ায় একটি বট গাছের নিচে বসে। চিড়া-বাতাসার ব্যাগ খুলে গপাগপ গিলতে থাকে। বাতাসা যেন বৈশাখী মেলার সনাতনের বানানো রসগোল্লা। অনায়াসে সোলেমান সাবাড় করে দেয় কেজিখানেক চিড়া-বাতাসা। তার খাওয়া যেন থামছেই না। খেয়ে যাচ্ছে সোলেমান। বটের ছায়ায় চিড়া-বাতাসা খেতে খেতে কখন যেন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়েছে খেয়াল নেই তার! বাড়ি যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই প্রচণ্ড পানির পিপাসা পায়। মোল্লাবাড়ির চাপকল থেকে পানি পান করে। ধীরে ধীরে ফুলছে সোলেমানের পেট। পিঁপড়ার চেয়েও ধীরে হাঁটছে সে। তার মনে হয়, এখনই ফেটে যাবে তার পেট। হাঁটতে কষ্ট হয় খুব। তাল হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।
‘মাঝ রাস্তায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন ক্যান?’ বটতলায় কানামাছি খেলতে এসে পড়ে থাকা সোলেমানকে প্রশ্ন করে ছয় বছরের এক শিশু। শিশুটির পেছনে বড় একটি দল। একজন বললো, ‘মনে হয় ঘুমায়?’ আরেকজন বললো, ‘একে জ্বিন এখানে ফেলে গেছে।’ ন্যাড়া মাথার একজন বললো, ‘মার্ডার, মার্ডার।’ শিশুদের দলটি দৌড়ে নিজ নিজ বাড়িতে খবর দিতে যায়। তাদের চেহারায় উত্তেজনা।
খোরশেদ মিয়া বৈশাখী মেলা থেকে বাড়ি ফিরেছেন। খবর পেয়েছেন এখনো বাড়ি ফেরেনি সোলেমান। তিনি চিন্তিত মুখে বারান্দায় পায়চারি করছেন। বাড়ির সবাই চিন্তিত। সোলেমানের খবর গাঁয়ে ছড়িয়ে পড়লে গাঁয়ের দুর্নাম হবে। খোরশেদ মিয়া ভাবছেন সোলেমান চিড়া-বাতাসার লোভে পালিয়ে যায়নি তো? ছেলেটাকে একা পাঠানো ঠিক হয়নি। বৈশাখী মেলায় সোলেমানকে আরও কিছু সময় থাকতে দিলে এমনটা হতো না। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে পথ চলেন তিনি। তবে ভ্রু কোঁচকানো।
বটতলায় সোলেমানের পাশে গ্রামবাসীর জটলা। গ্রামের পণ্ডিতরাও উপস্থিত। সবাই তাকিয়ে আছে সোলেমানের দিকে। পিঁপড়াদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। গ্রামের মেম্বার বললেন, ‘আহারে কম বয়সে মারা গেলো।’ ইমাম সাহেব বললেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’ খোরশেদ মিয়া হঠাৎ গ্রামবাসীর জটলা দেখতে পেলেন। ভিড় ঠেলে সামনে এলেন। বটতলায় পড়ে থাকা সোলেমানকে দেখে চিৎকার করে ওঠেন খোরশেদ মিয়া। মালিকের চিৎকারে সোলেমান ধীরে ধীরে চোখ খোলে। সামনে খোরশেদ মিয়া ও গ্রামবাসীকে দেখে সোলেমান অপ্রস্তুত হয়। সোলেমান খোরশেদ মিয়াকে বলে, ‘বিশ্বাস করেন চাচা, বেশি খিদা লাগছিলো; আর হবে না। মাফ কইরা দ্যান।’ খোরশেদ মিয়া অবাক চোখে তাকান। পিঁপড়ার দল বাতাসার প্যাকেট থেকে দ্রুত নেমে যেতে থাকে।

n বয়স : ২+৩+৩+৪ বছর; সপ্তম শ্রেণি, মানিকগঞ্জ সুরেন্দ্র কুমার সরকারি বালিকা        উচ্চ বিদ্যালয়

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ খ উৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া

পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির। 

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।

ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।

ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়। 

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”

প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।

নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • নিখোঁজ অটোরিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ ডোবা থেকে উদ্ধার
  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া