শুধু দুই মোটিফে আগুন লাগাকে ‘রহস্যজনক’ বলছে ফায়ার সার্ভিস, তদন্তে পুলিশ
Published: 12th, April 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এবারের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য বানানো দুটি মোটিফে আগুন লাগার ঘটনাকে রহস্যজনক বলছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, আজ শনিবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৫টা ২২ মিনিটে আগুন নেভায়।
আগুনের সূত্রপাত নিয়ে সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা রুহুল আমিন মোল্লা বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্যাপনের জন্য অনেকগুলো মোটিফ সেখানে রয়েছে। এর মধ্যে কেন শুধু দুটি মোটিফে আগুন লেগেছে, সেটি রহস্যজনক।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসহকারী পরিচালক মো.
এদিকে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্যাপনের জন্য অনেকগুলো মোটিফের মধ্যে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রায়’ কীভাবে আগুন লাগল, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ শুরু করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নববর্ষ উদযাপনের আগে ফ্যাসিবাদের আর কোনও মোটিফ কিংবা সাদৃশ্য স্বল্প সময়ে তৈরি করা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
এদিকে আজ সকালে চারুকলা অনুষদ দুঃখ প্রকাশ করে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নববর্ষের শোভাযাত্রা উপলক্ষ্যে বানানো ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফটি কে বা কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত নববর ষ তদন ত রহস য
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।
সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।
এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।
এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।