প্রায় ১৯ বছর পর সন্দ্বীপে প্রকাশ্যে কর্মী সমাবেশ করল জামায়াতে ইসলামী। গতকাল শনিবার সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠেনর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার চায়, মৌলিক সংস্কার চায়। সংস্কারের সুযোগ না দিয়ে, যৌক্তিক সময় না দিয়ে কেউ কেউ নির্বাচন নির্বাচন করছি। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে, স্বৈরাচার যাতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে পথ বন্ধ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়লেও কাউকে দেশ ছাড়তে হয়নি। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের মাত্রা এত বেশি ছিল যে, তাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।’ 
প্রধান বক্তা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা আনেনি, শেখ মুজিব স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়নি। ৯ মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছে বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছে জাতি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা হয়েছে, পূর্ণতা পেলাম ২০২৪ সালে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে নির্বাচন নির্বাচন করছেন। আমরা এখন সংস্কারবিহীন নির্বাচন চাই না। আগে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ওলামা লীগের বিচার হবে। তারপর এ দেশে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে থাকতে পারবেন না। যে রশিতে নিজামীকে ফাঁসি দিয়েছেন, সে রশিতে আপনাকে ফাঁসিতে ঝোলাব। কেয়ামতের বছর হতে পারে, কিন্তু আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না।’
কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আমির মুহাম্মদ আলা উদ্দীন সিকদার বলেন, ‘সন্দ্বীপের ৬০ মৌজা সীমানা সন্দ্বীপকে বুঝিয়ে দিতে হবে। ভাসানচর নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভাসানচর সন্দ্বীপের সাবেক ইউনিয়ন। সন্দ্বীপের অংশ কাউকে দিতে পারি না। অন্যায়ভাবে ওবায়দুল কাদের এটা দখল করে নিয়েছিল। সময় এসেছে সন্দ্বীপের ভূখণ্ড সন্দ্বীপকে বুঝিয়ে দেওয়ার। যদি কোনো ষড়যন্ত্র হয় জামায়াতে ইসলামী সন্দ্বীপবাসীকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
সন্দ্বীপ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল ইসলাম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আবু তাহেরের সঞ্চালনায় সমাবেশে  বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াত ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাবেক আমির অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী, উত্তর জেলার আমির মুহাম্মদ আলা উদ্দীন সিকদার, উত্তর জেলার সেক্রেটারি মুহাম্মদ আবদুল জাব্বার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম রনি, উত্তর জেলার সভাপতি মুহাম্মদ শওকত আলী প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সন্দ্বীপের নায়েবে আমির রফিকুল মাওলা, চট্টগ্রাম গণউন্নয়ন পরিষদের সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন নিজামী।
আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী সন্দ্বীপ যুব বিভাগের সভাপতি মাকছুদুর রহমান, সেক্রেটারি ছায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সন্দ্বীপের সভাপতি জিয়াউল হাসান ও সেক্রেটারি কেফায়েত উল্লাহ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম স ব ধ নত ম হ ম মদ ইসল ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ

নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং আটজন নারী। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

আরো পড়ুন:

গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ

আটকরা হলেন—আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।

বিজিবি জানিয়েছে, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুরে ওই ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। মুম্বাই শহরে পুরুষ দুজন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এবং নারী আটজন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিএসএফ ওই ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা/সাজু/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ