জাপানে বিশ্ব প্রদর্শনীর অনন্য সমাবেশে উদ্যাপিত হলো বাংলা নববর্ষ
Published: 15th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে বাঙালিরা যখন নতুন বাংলা সনের আবহে স্নাত হচ্ছেন, বাঙালি খাবার, পোশাক কিংবা গান-কবিতায় নিজের বাঙালিত্ব প্রকাশ করছেন, তখন একেবারে ভিন্ন এক স্থান ও আবহে জাপানের ওসাকা নগরীতেও গতকাল ১৪ এপ্রিল উদ্যাপিত হলো পয়লা বৈশাখ।
না, এটি সচরাচর প্রবাসী বাঙালিদের আয়োজনে কোনো মিলনায়তন বা উদ্যানে আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠান নয়, বরং ওসাকা এক্সপো ২০২৫ বা বিশ্ব প্রদর্শনীর অনন্য সমাবেশে এই উদ্যাপনের গুরুত্ব ব্যাপক।
এর মধ্য দিয়ে মূলত নিজের সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরার সুযোগ পেল বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ববাসীর কাছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ দাউদ আলীসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং স্থানীয় অনেক বাংলাদেশি। খোলা মঞ্চে সাংস্কৃতিক সংগঠন মাদল ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’সহ নানা বাংলা গান পরিবেশন করে।
ওসাকা এক্সপোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিল মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’