রাজশাহীতে বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষ, আহত একজনের মৃত্যু
Published: 15th, April 2025 GMT
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া মকবুল হোসেন (৩৮) দুর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের আমগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এর আগে সোমবার বিকেলে ওই এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, হামলার সময় মকবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মকবুল এলাকায় বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল ও সদস্যসচিব জোবায়েদ হোসেন একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, আনুলিয়া গ্রামের এক নারী প্রেমের টানে আমগ্রামের ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে আসেন। গ্রামবাসী তাঁদের বিয়ের আয়োজন প্রায় সম্পন্ন করেন। এ সময় আমগ্রামের কিছুসংখ্যক লোক এবং পার্শ্ববর্তী তরিপতপুর গ্রামের লোকজন ইসমাইল হোসেনের পক্ষ নিয়ে ওই বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন। এ নিয়ে আমগ্রামের লোকজনের সঙ্গে তাঁদের দ্বন্দ্ব হয় এবং এক পর্যায়ে পালিয়ে যান। ওই ঘটনার জের ধরে পরের দিন রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে প্রেমিক ইসমাইল হোসেনের পক্ষের লোকজন সশস্ত্র হামলা করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন এবং বেশ কয়েকজনকে আহত করেন। আহতদের কেউ কেউ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে একজন মঙ্গলবার বিকেলে মারা যান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে উপজেলা বিএনপি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। এই হত্যাকাণ্ডে বিরোধী কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন বা সম্পৃক্ততা আছে কি না এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনো ব্যক্তিবিশেষ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হুদা মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, একটি পরকীয়ার ঘটনা মীমাংসার জের ধরে এই সংঘর্ষ হয়েছিল। এটা একটা ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা। যে পক্ষের লোক মারা গেল, তারা বিষয়টি মীমাংসা করে দিতে চেয়েছিল। অন্য পক্ষ একই প্রস্তাব দিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মামলা করার জন্য তাদের বলা হয়েছে তারা এখনো আসেনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমগ র ম এক ন র স ঘর ষ উপজ ল অবস থ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সার্বিকভাবে আসন সংখ্যা কমানোসহ অর্গানোগ্রামে আরো ১৮টি নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, চারটি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাবভিত্তিক বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন ১৮টি বিভাগ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো—ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো— অপরাধবিদ্যা বিভাগ।
পাশাপাশি চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠন কাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুইজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ম্যানেজার একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং একজন ক্লিনার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্রের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, একজন অতিথি অধ্যাপক, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ম্যানেজার হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার একজন।
১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “আমরা মিটিংয়ে এগুলো সুপারিশ করেছি। অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, এমন না। একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন দরখাস্ত দেওয়া হয়, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। তারা ল্যাববেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেছেন, “অনেকগুলো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে, এখনই না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাস হলে বিস্তারিত বলতে পারব।”
ঢাকা/এমদাদুল/রফিক