ভর্তি পরীক্ষা তুমুল প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শুরু হয় স্বপ্নের পথচলা। কিন্তু সেই স্বপ্ন সেশনজটের কবলে পড়ে অনেক সময়ই রূপ নেয় দুঃস্বপ্নে। সেশনজট শুধু একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনেই বিঘ্ন ঘটায় না, বরং এর প্রভাব পড়ে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও আর্থ-সামাজিক জীবনেও।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষা জীবন শেষ না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী কর্মজীবনে প্রবেশ করতে দেরি করে ফেলেন। ফলে বাড়ে মানসিক চাপ, আর্থিক অসন্তোষ, এমনকি আত্মহননের মতো চূড়ান্ত পরিণতির দিকেও ঠেলে দেয় অনেককে। 

তবে এ বাস্তবতায় এক ভিন্নচিত্র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি)। দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে সেশনজটে নাকাল, সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সময়মতো শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করে হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের কাছে এক স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান।
 
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যেখানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের একাডেমিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক করতে পারেনি, সেখানে খুবি নির্ধারিত সময়ে মধ্যেই তার একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সব কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এর পেছনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সুপরিকল্পিত ও বাস্তবভিত্তিক কেন্দ্রীয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার।

আরো পড়ুন:

খুবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু বৃহস্পতিবার

হল না খোলায় ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের

প্রতিটি ডিসিপ্লিন সে ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়েই ক্লাস, পরীক্ষা সম্পন্ন করছে। এই পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল একাডেমিক ক্যালেন্ডার শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্যও একটি রোল মডেল হয়ে উঠেছে।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ছাত্র রাজনীতির কারণে একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই নীতিমালাও একাডেমিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।


প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী খাইরুন নাহার বলেন, “বাংলাদেশে সময় নষ্ট করাটা যেন শিক্ষা জীবনের অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বুঝেছি, সময়ের মধ্যে থেকে স্নাতক শেষ করাও সম্ভব। এটা আমার জীবনের গতি বদলে দিয়েছে।”

বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমার পরিবার সবসময় ভেবেছে আমি কত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটাব। কিন্তু এখানে এসে দেখেছি সময়মতোই সব শেষ হয়। পরিবারের দুশ্চিন্তাও কমেছে।”

সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মালাচেং রাখাইন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার আগে সেশনজট নিয়ে অনেক ভয় ছিল। কিন্তু এখানে এসে বুঝেছি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডার বাস্তবেই কার্যকর।”

বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী তান্না তাবরিজ জিমহা বলেন, “আমরা নির্দিষ্ট সময়েই সব কোর্স শেষ করতে পারি। এতে করে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্যও বাড়তি সময় পাওয়া যায়, যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব কম হয়।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.

এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে একাডেমিক ক্যালেন্ডার পরিচালনা করে। কোনো ডিসিপ্লিন আলাদা করে নিজের মতো করে সময় নির্ধারণ করতে পারে না। ফলে সার্বিক একাডেমিক কার্যক্রমে সুশৃঙ্খলতা বজায় থাকে।”

তিনি বলেন, “আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য সেশনজটমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে চেয়েছি। এর ফলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ে স্নাতক সম্পন্ন করতে পারে এবং কর্মজীবনে দ্রুত প্রবেশ করতে পারে। এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে সমাজ ও পরিবারেও।” 

ঢাকা/হাসিব/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এক ড ম ক ক য ল ন ড র ন র ধ র ত সময় স শনজট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি সব সময় শ্রমিকদের পাশে আছে : রাজিব 

মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২রা মে) বিকেলে নগরীর চাষাড়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব।

এসময় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশকাসীকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা। শ্রমিকরা হলো আমাদের দেশের চালিকা শক্তি। আপনাদের শ্রমে, ঘামে এবং ত্যাগে রচিত হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প ও অর্থনীতি। আপনাদের জন্যই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই আপনাদের সবাইকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ও আমার ব্যাক্তিগত পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। শ্রমিকদরে ন্যায্য অধিকার রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সব সময় শ্রমিকদের পাশে ছিলো, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি আজ বাংলাদেশের শ্রমজীবি মানুষ যে পরিশ্রম করে থাকে সেই পরিশ্রমের জন্যই আমরা নতুন ভাবে স্বপ্ন দেখেতে শুরু করেছি। বাংলাদেশকে গোটা পৃথিবীর বুকে একটি আত্ননির্ভরশীল দেশ হিসেবে আমরা দেখতে চাই।

ভিপি রাজিব আরও বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ২০২৪ এ আমাদের হাজার ছাত্র-জনতা আত্নহতির বিনিমেয়ে আমরা আবারো নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমরা শিল্প সমৃদ্ধির একটি জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জকে গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের নিরাপদ কর্মের পরিবেশ যারা নষ্ট করতে চায় আমরা তাদেরকে হুশিয়ার উচ্চারন করে বলতে চাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তথা নারায়ণগঞ্জ যতদিন আছে ততদিন কোন শ্রমিকের প্রতি বিন্দু পরিমান আঘাত কেউ করতে পারবে না। আপনারা জানেন আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের জন্য ৩১টি দফা দিয়েছেন। তার মধ্যে সমস্ত সেক্টরের কথা রয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করবো। আমরা বিশ্বাস করি আগামী দিনে যে বাংলাদেশকে আমরা দেখতে চাই সেই বাংলাদেশ হবে বৈষম্যবিহীন। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমান ভাবে তার অধিকার ভোগ করবে। যে উপরের তলায় আছেন, যে শিল্পপতি আছেন, তার যেমন অধিকার আছে, তেমনি একজন শ্রমিকের অধিকারও সমান হতে হবে।

‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন কাউসার এর সভাপতিত্বে এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মামুনুর রশিদ এর সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান বাবুল, সহ-অর্থ সম্পাদক আব্দুল আল মামুন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লুৎফুন নাহার লতা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দল নারায়ণগঞ্জ জেলা আহবায়ক সলিমুল্লাহ করিম সেলিম, শ্রমিক নেতা এজাজ চৌধুরী, মোঃ রাজু আহম্মেদ ভূঁইয়া ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক সহ বিভিন্ন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ