জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা আর ভারতের আধিপত্যের ছায়া দেখতে চাই না। পারস্পরিক শ্রদ্বা, সম্প্রীতি ও সমতার ভিত্তিতে প্রতিবেশী হিসেবে বসবাস করতে চাই। আমরা ভালো থাকলে তারাও ভালো থাকবে, আমাদের ভালো কেড়ে নিলে তারাও ভালো থাকবে কিনা তা তাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা দেখতে চাই, আমরা উভয়ই ভালো থাকবো। সেই পরিবেশকে ভারতকেই নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ন্যায্য অধিকার দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘লালমনিরহাট সীমান্তে হাসিনুর রহমান নামে এক বাংলাদেশি যুবক বিএসএফর গুলিতে মারা গেছেন। তার বুকের উপর পা রেখে বিএসএফ ঠান্ডা মাথায় তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। লাশ টেনেহিঁচড়ে ওপারে নিয়ে যায় বিএসএফ। সীমান্ত পেরিয়ে বিএসএফ ঠান্ডা মাথায় এই কাজ করেছে। আমাদের বিজিবি ভারতে প্রবেশ করে এগুলো করে না। আমরা তাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তাদের সম্মান করি। সে সম্মানটুকু বাংলাদেশের পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা আর আধিপত্যের ছায়া দেখতে চায় না।’

শনিবার সকালে লালমনিরহাট জেলা কালেক্টরেট মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

জামাায়াত আমির বলেন, ‘তিস্তার কারণে প্রতিবছর উত্তর জনপদের মানুষ আতংকে থাকে। তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোনো ধরনের চোখ রাঙানোকে তোয়াক্কা করা যাবে না।’

ধর্মীয় সম্প্রতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘টানা ১৫ দিন আমারা মসজিদ, মন্দির, মঠ ও চার্চ পাহারা দিয়েছি। আগামীতে এমন এক দেশ চাই, যেখানে কোনো প্রতিষ্ঠান পাহারা দিতে হবে না। ৫৩, ৫৪ বছর ধরে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরু এই শ্লোগান দিয়ে সমাজকে বিভক্ত করা হয়েছিল। আমাদের মুখোমুখি করে রাখা হয়েছিল। গত ফ্যাসিস্ট আমলে রংপুরের মৎসপল্লী, দিনাজপুরের সাঁওতাল পল্লী ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু পল্লীতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা ঘটেছিল। হিন্দুদের যারা মায়া কান্না করে তারাই এই হামলা করেছিল।’

নির্বাচন নিয়ে ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দুটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। খুনিদের বিচার দৃশ্যমান হতে হবে ও প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। এই দুটি ছাড়া জনগন নির্বাচন মেনে নেবে না। আমারা নির্বাচন চাই। বিচার ও সংস্কার করে নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’

লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আবু তাহের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলালসহ জেলার অন্যান্য জামায়াত নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়া জনসভায় লালমনিরহাট হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি পুস্পজিৎ বর্মণ বক্তব্য রাখেন। জনসভায় প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম জ ম য় ত আম র র রহম ন জনসভ য় আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক