নৌবাহিনীর সৈনিক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের একটি বিপণিবিতানের সামনে থেকে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি, একটি মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন জব্দ করা হয়।

আজ শনিবার বেলা একটার দিকে চকরিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রকিব উর রাজা ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার তারাইল উপজেলার মোহাম্মদ মিজান (৩৬) ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমী বেগম (২৭)।

সহকারী পুলিশ সুপার রকিব উর রাজা বলেন, মোহাম্মদ মিজান নৌবাহিনীর সৈনিক পরিচয় দিয়ে চকরিয়া পৌর শহরের স্বপ্নছোঁয়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ক্যামেরা ভাড়া নিতে যান। পরবর্তী সময়ে তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হলে প্রতিষ্ঠানের মালিক চকরিয়া থানা–পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিজান ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমীকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা নৌবাহিনীর পরিচয়ে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

রকিব উর রাজা আরও বলেন, গ্রেপ্তার মিজানের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর, রাজবাড়ী সদর, মাদারীপুরের শিবচর, কুষ্টিয়া সদর, পাবনা সদর ও কিশোরগঞ্জের তারাইল থানায় প্রতারণার ছয়টি মামলা রয়েছে। মূলত মিজান ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমী প্রতারক চক্রের সদস্য। নৌবাহিনীর সৈনিক পরিচয়ে ক্যামেরা ভাড়া নিয়ে আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা ছিল এই দম্পতির।

সংবাদ সম্মেলনে চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার নৌবাহিনীর পরিচয়দানকারী মোহাম্মদ মিজান ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমীর বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা হয়েছে।

আসামিদের বেলা দুইটার দিকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হয়। আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চকর য়

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ