সালিশের নামে বাড়ি ভাঙচুর, বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার
Published: 20th, April 2025 GMT
সালিশের নামে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে যশোর সদর উপজেলা বিএনপির দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বহিষ্কারকৃতরা হলেন সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও চাঁচড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা এবং চাঁচড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আবদুল হালিম। তাদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতভাবে সংগঠনের নীতি-আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে এক সালিশ বৈঠকে গোলাম মোস্তফা ও আবদুল হালিম করিচিয়া গ্রামের মালেকা বেগমের আধাপাকা বাড়ি ভাঙচুর করেন। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী মালেকা বেগম কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাও করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত মালেকা বেগমের অভিযোগ, প্রতিবেশী ফজরের সঙ্গে রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিএনপি নেতাদের ডেকে এনে সালিশের নামে তাদের তিনটি আধাপাকা বাড়ি ভেঙে রাস্তা তৈরি ও লুটপাট করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, দলের নির্দেশনা অমান্য করায় দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলে যারা বিশৃঙ্খলা করবে, যে পদেই থাকুক না কেন তাদের বহিষ্কার করা হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, আর কোনো শাসক যাতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পথ অনুসরণ করে নাগরিকদের নিপীড়নসহ দেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে না পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সংস্কার প্রশ্নে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের চেয়ে দেশকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংস্কার প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরুতে নুরুল হক এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে আজ গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বৈঠকের শুরুতে নুরুল হক বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বান থাকবে, যে সংস্কারগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে, সেগুলো যেকোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
নুরুল হক বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেশের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হয়ছিল। গণ অধিকার পরিষদ নবীন রাজনৈতিক দল হলেও ২০১৮ সাল থেকে তাঁরা মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নতুন অধ্যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে।
সম্মিলিতভাবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, তাঁদের লক্ষ্য দ্রুততম সময়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
সংস্কার প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, শুধু আলোচনার মধ্য দিয়েই সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না। সবার একত্রিত থাকার তাগিদ সব সময় জারি রাখতে হবে।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
আলোচনায় গণ অধিকার পরিষদের ১০ সদস্যদের প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে। নুরুল হক ছাড়া প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র ফারুক হাসান, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য খালিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান রিজু, সাকিব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক শাকিলুজ্জামান, সহমানবাধিকার–বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা দিশা, যুব উইংয়ের সদস্য মুমতাজুল ইসলাম, গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।