দুটি সোয়েটার হারিয়ে গেছে বলে দাবি করেছিলেন জুনাইদ আহ্মেদ পলক। আগামী শীত পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হলে সোয়েটার জোগাড় করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। সোয়েটার হারানোর কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীও।
গতকাল সোমবার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এসব অভিযোগ তোলেন। পলকের সোয়েটার গতকাল বিকেলে খুঁজে পাওয়া গেছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন সোয়েটার খুঁজে পাওয়ার কথা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। কারাগারে থাকা তাঁর বেশ কিছু জামা কাপড়ও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
আবদুল্লাহ আল মামুন গতকাল সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, কারাগার থেকে জুনাইদ আহ্মেদ পলকের সোয়েটার হারিয়ে যাওয়ার তথ্য জানার পর তিনি তাঁর কর্মকর্তাদের বিষয়টি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেন। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, পলকের সোয়েটারসহ শীতের কাপড় কারাগারের স্টোররুমে জমা আছে। সম্প্রতি পলকের স্ত্রী কারাগারে এসেছিলেন। তখন পলক শীতের কাপড় তাঁর স্ত্রীকে দেওয়ার জন্য কারাগারের নিরাপত্তারক্ষীর কাছে দিয়েছিলেন। কিন্তু অসাবধানতাবশত কারারক্ষীরা তা ভুলে গিয়েছিলেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, সেদিন বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ গ্রহণ শেষ হলে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই ব্যাগের মালিকানা না পাওয়ায় আবার সেটি কারাগারের স্টোররুমে রাখা হয়।
আদালতে সোয়েটার হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলার পর কারা তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছিলেন, ‘আলোচনায় থাকার জন্য জুনাইদ আহ্মেদ পলক উদ্ভট সব দাবি করে থাকেন। এই সোয়েটার হারিয়ে যাওয়ার তথ্য, এমন একটি উদ্ভট দাবি। কারাগার থেকে কোনো বন্দীর জিনিসপত্র হারানোর সুযোগ নেই।’ পরে তিনি বিষয়টি অনুসন্ধান করেন।
আরও পড়ুনপলক বললেন, কারাগার থেকে শীতের সোয়েটার হারিয়ে গেছে, উদ্ভট বলছেন তত্ত্বাবধায়ক ২০ ঘণ্টা আগেগতকাল পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন, তাঁর মক্কেল কারাগারে ডিভিশনের সুযোগ পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে কারা তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘জুনাইদ আহ্মেদ পলক আমার কারাগারের চতুর্থ তলায় থাকেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে জেলকোডের বিধান অনুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেণির একজন কারাবন্দী। প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, তিনিও ঠিক একই সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাঁর আইনজীবীর তথ্যও সঠিক নয়।’
গত বছরের ১৪ আগস্ট গ্রেপ্তার হন পলক। ছয়টি মামলায় তাঁর মোট ৫৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।
বিভিন্ন হত্যা মামলায় গতকাল সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনাইদ আহ্মেদ পলক, তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুননতুন মামলায় আমু, আনিসুল, পলকসহ ৬ জন গ্রেপ্তার২২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আল ম ম ন পলক র স ম দ পলক প রথম গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।