স্কুলে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে শিশু নিহত, বাবা ও বোন আহত
Published: 23rd, April 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ পৌরসভায় স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাক্টরের ধাক্কায় বাবার মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে জিনেদিন জিদান (৬) নামের একটি শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা, বড় বোন এবং ট্রাক্টরচালকের সহকারী আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার সকালে পৌরসভার সবুজপাড়া এলাকায় এলএসডি মোড়ে দেবীগঞ্জ-ভাউলাগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জিদান একই উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বলরামপুর প্রধানপাড়া এলাকার স্কুলশিক্ষক নজরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে। সে একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এ দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন জিদানের বাবা নজরুল ইসলাম (৪৫), বড় বোন নওরীন জাহান (১০) ও ট্রাক্টর চালকের সহকারী কাঞ্চন (৩০)।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে চিলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তাজুল ইসলাম এবং দেবীগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আক্কাস আলী ভূঁইয়া জানান, জিদান ও নওরীন দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের নর্থস্টার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। আজ সকালে মোটরসাইকেলে তাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন বাবা নজরুল ইসলাম। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইটবোঝাই ট্রাক্টর তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনজনই মোটরসাইকেল থেকে সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ দুর্ঘটনার সময় ট্রাক্টরটি সড়কের পাশের একটি দোকানঘর ভেঙে পাশের খাদে উল্টে যায়। এ সময় ট্রাক্টরচালক পালিয়ে গেলেও তাঁর সহকারী কাঞ্চন গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয় লোকজন আহত চারজনকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে জিদানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। কাঞ্চনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া নিহত শিশুটির বাবা ও বোন দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
এদিকে দুর্ঘটনার প্রতিবাদ, নিরাপদ সড়ক ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে আজ দুপুরে শহরের বিজয় চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
চালক পালিয়ে গেলেও ট্রাক্টরটি জব্দ হয়েছে বলে জানান দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা। তিনি জানান, এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা হয়েছে। শিশুটির লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।