তিস্তা প্রকল্পের সঙ্গে উত্তরের প্রায় তিন কোটি মানুষ জড়িয়ে আছে। এরইমধ্যে বিএনপির ডাকে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এতে অনেক দলেই সমর্থন দিয়েছে। আগামীতে বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। বুধবার নীলফামারী শিল্পকলা মিলনায়তনে বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও জনসম্পৃত্তি শীর্ষক কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, বিএনপি কখনও কোনো মানুষের ধর্ম-বর্ণ নিয়ে বিচার করে না। বিএনপি মনে করে প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার। রাষ্ট্রে উচিত প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।

সংরক্ষিত আসন সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধিতে ৫০টি আসনের পরিবর্তে আগামীতে ১০০টি সংরক্ষিত আসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিএনপি। তবে সব দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আসন বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে পল্লী চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। বিএনপি আবারও রাষ্ট্রের মানুষের সেবা দানে পল্লী চিকিৎসার ব্যবস্থা চালু করবে। রোগ প্রতিরোধে যাতে মানুষের মাঝে সচেতনা বৃদ্ধি পায়, মানুষ যাতে বাড়িতে বসে প্রাথমিক চিকিৎসা পায়, এ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা হবে। 

কর্মশালায় বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, ‘সংষ্কার ও নির্বাচন বিপরীতমুখী ঘটনা নয়। তাদের ইচ্ছে করেই মুখোমুখি করা হচ্ছে।’
 
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘যে সংস্কারের চিন্তা সরকার করছে, পাঁচ বছর আগেই তরুণ নেতা তারেক রহমান সেই সংস্কারের রুপরেখা দিয়েছেন। তারেক রহমানের সেই সংস্কারগুলো সমাজে সমাদৃত হয়েছে এবং সরকার গ্রহণ করেছে।’

বিএনপির নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি আ.

খ.ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে এ সময় দলের কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক মিসেস নেওয়াজ হালিমা আরলী, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বিএনপি নীলফামারী শাখার সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম বক্তব্য দেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল।

এছাড়া সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা বিএনপি কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি আব্দুল গফুর সরকার। এখানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বেবী নাজনিন, তারেক রহমানে উপদেষ্টা মাহদি আমিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নীলফামারী জেলা শাখার সকল ইউনিটসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ষমত ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ র ব যবস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ