Prothomalo:
2025-06-16@08:54:02 GMT

বিবাদ ও বচনের মেলবন্ধন

Published: 24th, April 2025 GMT

ছাপ, জলছাপ আর রঙিন কালির জটিল নকশার পুরোনো দলিলে হস্তাক্ষরে সাজানো আছে মানুষের বিবাদের ধারাভাষ্য। এককথায় মামলা-মোকদ্দমার নথিপত্র, যা এখন ‘অ্যান্টিক’ বা পুরোনো নিদর্শন। কাগজের বিবর্ণতা ও অক্ষরের টেক্সচার অনেক ক্ষেত্রে পাঠযোগ্যতাকে হ্রাস করেছে। এই দলিলের জমিনে আরহাম উল হক চৌধুরীর প্রবাদ-প্রবচনের শারীরিক অবয়ব চিত্রায়ণ করেছেন বাংলা অক্ষরমালার আকৃতিগত সৌন্দর্য বিন্যাসে।

বলা যায়, এ যেন ইতিহাস, শিল্প ও ভাষার নন্দনতাত্ত্বিক সম্মিলন, যেখানে লেখার সৌন্দর্য ছাপিয়ে সময়, স্মৃতি ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের বয়ানও তৈরি হয়েছে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ব্রিটিশ রাজ কিংবা পাকিস্তান আমলের নকশাখচিত দৃশ্যরূপ ও বিভিন্ন মামলার হস্তলিপি শিল্পীর নির্মিত বচন-অবয়বকে করেছে দৃষ্টিনন্দন। প্রবচন ও বচনের সাদৃশ্য–অবয়বে লোকজ ভাষার গভীরতা ও তাত্ত্বিক ভার সম্পূর্ণটা স্পষ্ট হয়েছে, তা বলা যায় না। কারণ, প্রবচনগুলোর ব্যাখ্যা বহুমাত্রিক। তবে ভাব ও ব্যঞ্জনা পুরোটা না উঠলেও ক্যালিগ্রাফির বিন্যাসে রয়েছে একধরনের ছন্দময় ভাবনা, যা ফারসি ‘তুঘরা’ অনুপ্রেরণায় হলেও স্বতন্ত্রভাবে ‘বাংলা’ই।

গবেষণা তো অবশ্যই, এ ছাড়া আরহামের শৈলীতে স্পষ্ট একধরনের কাব্যিক অনুশীলনও লক্ষণীয়, যেখানে কেবল অক্ষরের বিন্যাস নয়, কাগজের গঠন, রং এবং লেখার গতিপথ মিলে এক দৃশ্যকাব্য গড়ে ওঠে। কাজগুলো দর্শককে শুধু দেখে যাওয়ার সুযোগ দেয় না, বরং প্রতিটি বচনের মধ্যে লুকানো সময়-স্মৃতি অনুধাবনের আহ্বান জানায়।

শিল্পীর মতে, প্রাচীন বচনগুলোর শক্তি শুধু বাক্যেই নয়, বরং এগুলো বহন করে সময়ের গভীর দর্শন। আর পুরোনো দলিল, যেগুলো অনেক সময় ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যেতে বসেছে, তাদের শরীরে যখন এসব বচনের রেখা ওঠে, তখন সেটা হয় অতীত ও বর্তমানের মধ্যে একধরনের নীরব সংলাপ।

শিল্পীর এই সত্য অনুধাবন করা যায় ‘কলের পুতুল’, ‘অচিন পাখি’, ‘ভরাডুবি’, ‘গরুর শোকে শকুনি কাঁদে’, ‘কালি-কলম-মন লিখে তিনজন’, ‘ভেজা বেড়াল’ প্রবচন লিখিত ক্যালিগ্রাফিতে। তবে কিছু কাজে ভাব আর রূপে দ্বন্দ্ব রয়েছে—দৃশ্যত চমকপ্রদ হলেও বচনের গভীর অর্থ শিল্পের ভিজ্যুয়াল প্রকাশে পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি।

আর্টকনের সহযোগিতায় বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ‘দলিলে দৃশ্যপট’ শিরোনামের এ প্রদর্শনী আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ঐতিহ্যকে কেবল দেখার নয়, বোঝারও প্রয়োজন আছে। আর শিল্পই পারে সেই বোধ জাগাতে।

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার গ্যালারিতে প্রদর্শনীটি ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত দর্শকের জন্য খোলা থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বচন র

এছাড়াও পড়ুন:

চীনা পুতুল লাবুবু সারা বিশ্বে এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কেন

গত বছরের শেষ থেকেই দেখা যাচ্ছিল হাতব্যাগের সঙ্গে অনুষঙ্গ ঝোলানোর ধারা। ইংরেজিতে যেটাকে বলে ‘ব্যাগ চার্মস’। এ ক্ষেত্রেও বিশ্বখ্যাত ফরাসি ব্র্যান্ড ‘আরমেস’ পিছিয়ে নেই। গত বছর আরমেসের ঘোড়া আর ছোট্ট আকারের বাড়ি, যেসবের দাম কয়েক লাখ টাকা, বিক্রি হয়েছে দেদার। ব্যাপারটা যেন এমন, এই ব্যাগ চার্মস আপনার স্ট্যাটাসের প্রতীক। কে কতটা শৌখিন, তার প্রকাশ যেন এই ঘোড়া আর বাড়ি। এ ধারায় এবার বাজিমাত করল ‘লাবুবু’ নামের এক চীনা পুতুল। দেখতে খানিকটা ভীতিকর। পুতুলগুলো কেনার জন্য গভীর রাত থেকে দোকানের বাইরে সার বেঁধে দাঁড়াচ্ছে হাজারো মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন থেকে আরব আমিরাতের মতো দেশে একটা পুতুলের জনপ্রিয়তা যখন পাগলামির পর্যায়ে পৌঁছে যায়, বাংলাদেশে বসে মনে তখন প্রশ্ন আসে—কী আছে এই পুতুলে?

লাবুবুর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ‘আনবক্সিং’ ভিডিওগুলোর বড় একটা ভূমিকা আছে। পুতুলটির উৎপাদক চীনা কোম্পানি পপ মার্ট। তাদের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, লাবুবু পাওয়া যায় ‘ব্লাইন্ড বক্স’-এ, অর্থাৎ বাক্সটি খোলার আগে ভেতরে কী আছে, তা থাকে অজানা। এই রহস্য বলুন বা চমকই মূলত আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এটাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। জনপ্রিয় হওয়ার আরেকটি কারণ হলো, এই পুতুলগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য একধরনের ‘হ্যাপিনেস জেনারেটর’, মানে মনে সুখ বা আনন্দ তৈরি করে। এসবের মধ্যে আছে একধরনের ‘সেলফ-হিলিং’ প্রভাবও।

লাবুবুর উৎপত্তি চীনের হংকংয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চীনা পুতুল লাবুবু সারা বিশ্বে এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কেন