রাজশাহীর চারঘাট থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবৈধ বালুমহাল চালাচ্ছিলেন পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতলেবুর রহমান মতলেব। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের প্রত্যাহার দাবি করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।

পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চারঘাটের চৌরাস্তা মোড়ে এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। 

আবু সাঈদ চাঁদ চারঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘‘নদীভাঙন রোধে স্থানীয় প্রশাসন ইউএনও ও এসিল্যান্ড প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। এ জন্য তাদের দোষ দিতে পারছি না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, চারঘাট বলে একটা থানা আছে, ওসি আছে, পুলিশ আছে কিন্তু এদের কোনো কাজ নাই। এরা বিগত সময়ে যেগুলো করেছে, এখনো সেগুলোই করছে। রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হলেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। ডিআইজিকে ওসির বিষয়ে বলেছি। তারপরও যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে জনগনকে সাথে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’


তিনি আরও বলেন, ‘‘চারঘাটে বালু উত্তোলন হচ্ছে অবৈধভাবে, কিন্তু পুলিশ নীরব দর্শক। রাতে গিয়ে বালুর ট্রাকের টাকা গুণে আপনারা টাকা নিচ্ছেন। বালু উত্তোলন বন্ধে কোনো ভূমিকা নেই। আপনাদের প্রশাসনের কাছে আজকেই শেষ কথা। সেদিন ডিআইজি সাহেবকেও বলেছি, এটা ফালতু একটা ওসি। যে ওসির কোনো কাজ নাই, সে ওসি চারঘাটে থাকতে পারবে না।’’

চারঘাট উপজেলা সদরেই অবৈধ বালুমহাল চালু করে মাটি কাটছিলেন পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতলেবুর রহমান মতলেব। তার সঙ্গে জেলা ও স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাও ছিলেন। উপজেলা প্রশাসন কয়েকদফা অভিযানে গিয়েও অবৈধ বালু ও মাটি কাটা বন্ধ করতে পারেনি। এতে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, উপজেলা ক্যাম্পাসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। হামলার আশঙ্কায় কিছুদিন ধরে উপজেলা প্রশাসন আর অভিযানেই যাচ্ছিল না। এ নিয়ে গত গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর সেদিন থেকেই মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ সমাবেশে বলেন, ‘‘চারঘাটের মাটিতে খবরদারি চলবে না। আমরা আইনকে শ্রদ্ধা করি, আইনের মধ্যে চলার চেষ্টার করি। আইন যে ভঙ্গ করছে সে বিএনপির লোক হয়ে থাকলেও খাতির করছেন কেন? তাকে ধরেন। পরিস্কার কথা আমার, আমি নিজে অন্যায় করে থাকলে আমাকেও ধরেন। যারা ঘাট দখল করে খাবে, চাঁদাবাজি করে খাবে- তার দায়ভার বিএনপি নেবে না। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’’

মানববন্ধনে সাধারণ মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বুধবার বিকেল থেকেই চারঘাট উপজেলাজুড়ে মাইকিং করা হয়েছিল। সকাল ১০টা থেকেই উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সাধারণ মানুষ উপস্থিত হতে থাকেন। মানববন্ধনে বিভিন্ন এলাকার দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারাও অবৈধ বালুমহাল বন্ধ এবং ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম বিকুল, যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহীন, উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক মাসুদ রানা, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল মমিন, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালেক আদিল, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির রহমান মুকুট প্রমুখ।

মানববন্ধন থেকে প্রত্যাহারের দাবি ওঠার বিষয়ে কথা বলতে চারঘাট থানার ওসি মিজানুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। 

এর আগে গত সোমবার তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, থানার পাশেই যে অবৈধ বালুমহাল চলছে তা তিনি জানেন না। বালুমহাল থেকে সপ্তাহ হিসেবে টাকা নেওয়ায় ওসি মিজানুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে অসযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ আছে। সেদিন তিনি এ অভিযোগও অস্বীকার করেছিলেন।

ঢাকা/কেয়া/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র রহম ন ব এনপ র স ব র রহম ন ব যবস থ র ব এনপ উপজ ল মতল ব

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন

ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর পাড় এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে  সড়ক অবরোধ সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও  করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ  করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এতে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের উভয় পাশে যানবাহন বন্ধ হয়ে যানজটের সৃস্টি হয়।

বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ  অনুস্ঠিত হয়। ১১ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন আজ দুপুরের পর এলাকাবাসীর সাথে নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলবেন তাদের সমস্যার কথা শুনবেন এবং দ্রুতই তা সমাধানের জন্য কাজ করবেন। 

এ সময় লালপুর পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মুসা বলেন জলাবদ্ধতার কারনে মুসুল্লিরা নামাজ পরতে পারছেনা,কর্মজীবিরা কাজে যেতে পারছেনা,স্কুল -কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা,নোংরা পানির কারনে ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পরেছে।

আমাদের কে আশ্বাস করেছিলো সেনাবাহিনী কতৃক যে পাম্প বসানো হয়েছিলো সেটা চালু হলে আমাদের দ্ঃূক কস্ট লাঘব হবে। কিম্ত সে পাম্প চালু হলেও আমাদের কস্ট শেষ হয়নি। সেই পাম্প আমাদের কোন কাজে আসেনি। 

আমরা  সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি দিয়েছি তারা এসে দেখেও গেছে কিন্ত আজো সমস্যার সমাধান করা হয়নি। বিগত সরকারের আমলে তখনকার চেয়ারম্যান, এমপি সাহেবের নিকট গিয়েছি। শামীম ওসমান এসে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তা শুধু কথার কথাই ছিলো। কিন্ত কোন কাজে আসেনি। 

ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন জানায়, দীর্ঘদন যাবৎ আমরা এই সমস্যা আছি। মৃত মানুষের লাশ পযন্ত দাফন করতে পারছিনা। মসজিদের ভিতরে পানি নামাজ পরতে পারছিনা। রাস্তায় বের হতে পারছিনা।

আমাদের কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিতে হয় ছাদের ওপরে নতুবা অন্য এলাকায় গিয়ে। এ সব কিছুই সরকারের সকল বিভাগের কর্মরত কর্তার জানে। কিন্ত শুধু আশ্বাস পেয়ে গেছি। কোন সমাধান পাইনি তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে আমাদেরকে। 

আমরা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ফতুল্লায় এতো উন্নয়ন হয়, কিন্তু লালপুর পৌষাপুকুর পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হোক।

ব্যবসায়ী হাবিব জানায়, আমাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের কোন কাজ হয় নাই। আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্ত কোন কাজ হয়নি।  আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন প্রকার টেক্স আর দিবোনা।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, লালপুর- পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী, আজাদুর রহমান আজাদ,আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রফিক, লালপুর আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সভাপতি মো. জনি, শামীম।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন