পেহেলগাম হামলার জেরে ভারতে বন্ধ পিএসএল সম্প্রচার
Published: 24th, April 2025 GMT
কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে কূটনৈতিক অঙ্গন ছাড়িয়ে ক্রীড়াঙ্গনেও। এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন পর্যটক। হামলার পর ভারতের অভ্যন্তরে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব আরও তীব্র হয়েছে। যার সরাসরি প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে খেলাধুলার অঙ্গনে।
ভারতের জনপ্রিয় ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্যানকোড’ ঘোষণা দিয়েছে তারা ২০২৫ সালের পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) এর সম্প্রচার ভারতে স্থগিত করেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ফ্যানকোড এক বিবৃতিতে জানায়, “পেহেলগামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার প্রেক্ষিতে এবং জাতীয় আবেগকে সম্মান জানিয়ে আমরা পাকিস্তানভিত্তিক এই প্রতিযোগিতার সম্প্রচার সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
আরো পড়ুন:
ফর্মে থাকা এনামুলে আত্মবিশ্বাসী গাজী আশরাফ
মানহীন পারফরম্যান্সে ক্রিকেট বাজারে অস্থিরতা
এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তান সুপার লিগের ভারতে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেল। যা লিগটির আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড) পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে না। ফলে দুই দেশের মধ্যে চলমান ক্রীড়াগত দূরত্ব আরও গভীর হলো।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক
রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।
চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ