পার্বত্যাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটাতে হবে: পার্বত্য উপদেষ্টা
Published: 25th, April 2025 GMT
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটানোর গুরুত্বারোপ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কৃষি এবং ইকো-ট্যুরিজমের পাশাপাশি মাছ উৎপাদনে কাপ্তাই হ্রদকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সিলেটের চা চাষের মতো পার্বত্য অঞ্চলকেও কফি ও কাজু বাদামের অঞ্চলে পরিণত করতে হবে। পাহাড়ে কফি চাষ ও ইকো-ট্যুরিজম সম্প্রসারণে ব্যাপক উদ্যোগের পরিকল্পনা নিয়েছে পার্বত্য মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার রাঙামাটিতে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশে করণীয় শীর্ষক সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেন, প্রত্যেক ধর্মের শান্তির বাণী ও অসাম্প্রদায়িকতা রয়েছে। কোনো ধর্মেই সাম্প্রদায়িকতা নেই। তাই সবাইকে প্রত্যেক ধর্ম নিয়ে চর্চা করতে হবে। তবে তা যদিও চর্চা করতে না পারলেও অন্ততপক্ষে কিছু জ্ঞান ধরে রেখে ব্যক্তিগত জীবনকে আরো উন্নততর করা সম্ভব হবে।
গৌতম বুদ্ধ অষ্টাঙ্গিক মার্গের বাণীতে সম্প্রীতির কথা বলেছেন উল্লেখ করে পার্বত্য উপদেষ্টা বলেন, পাহাড়ে সম্প্রীতি বজায় রাখা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাই আমাদের আরো সম্প্রীতির উন্নয়ন ঘটাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.
স্বাগত বক্তব্যে দেন শ্যামল মিত্র চাকমা। সেমিনারে বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশে করণীয় সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ট্রাস্টি রাজীব কান্তি বড়ুয়া।
দিনব্যাপী সেমিনারে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের দুই শতাধিক ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।