ফেরি সার্ভিস বন্ধে চক্রান্তের অভিযোগ
Published: 26th, April 2025 GMT
সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া রুটে চালু হওয়া ফেরি সার্ভিস বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সন্দ্বীপে পৃথক কর্মসূচিতে এ অভিযোগ করেন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। তারা বলেন, ‘একটি সিন্ডিকেট আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধের পাঁয়তারা করছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও, অন্য সময়ে ফেরি চালু রাখা সম্ভব। এ ছাড়া সিট্রাক দিতে মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ তা অমান্য করে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সন্দ্বীপবাসী মেনে নেবে না।’ এদিকে সন্দ্বীপের বাসিন্দা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেছেন, ‘নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে কথা হয়েছে। ফেরি তুলে নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেরি তুলে নেওয়ার আগেই 
 বিকল্প সিট্রাক দেওয়া হবে। পন্টুনও কোথাও সরানো হচ্ছে না।’
 গত ২৪ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ সমুদ্র পথে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছয়জন উপদেষ্টা ও দু’জন বিশেষ সহকারী উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখে প্রধান উপদেষ্টাও। এতে উচ্ছ্বসিত হন যাতায়াতে দীর্ঘদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসা সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। গত ২০ এপ্রিল এই রুটে ফেরি সার্ভিস সাময়িক বন্ধের একটি আদেশ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধের কথা জানান বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সামুদ্রিক এই রুটে ফেরিটি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির এমন সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। এরপর থেকে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা, এই রুটে চলাচলরত কপোতাক্ষ ফেরি ও পন্টুন সরিয়ে না নেওয়ার দাবি জানানো হয়।  
 সাংবাদিক সালেহ নোমানের সভাপতিত্বে ও সমাজকর্মী আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন– চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসাইন, সন্দ্বীপ পৌরসভা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন দিদার, সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি ফোরকান উদ্দীন রিজভী, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আকবর ভূইয়া, সমাজকর্মী অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুজা-উদ-দৌলা সজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুর নবী, গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-নারীবিষয়ক সম্পাদক নাসরিন আক্তার, মিলাদ উদ্দীন মুন্না, খাদেমুল ইসলাম, এমআরকে তারেক, নুর নবী রবিন, মিলাদ হোসাইন, মাহবুবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
 মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় সন্দ্বীপের সংগঠন ‘ছাত্র ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ল স্টুডেন্ট ফোরাম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার স্টুডেন্ট ফোরাম, নাবিক বহুমুখী সমবায় সমিতি, চট্টগ্রাম কলেজ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, আমরা সন্দ্বীপবাসী, নাগরিক সমাজ, ইসলামিক ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ও যুব পরিষদ, আলোকিত সংঘ, সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন, উড়িরচর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, সন্দ্বীপ ইসলামী কালচারাল ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।
 চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ও সন্দ্বীপের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘যদি ফেরি বন্ধ করে, আমাদের লাশের ওপর দিয়ে বন্ধ করতে হবে। আমরা ফেরি এখান থেকে যেতে দেব না। ফেরি এখানে থাকবে। প্রতিকূল পরিবেশে বন্ধ রাখা হলেও অনুকূল পরিবেশে যেন ফেরি চলাচল চালু থাকে।’ 
 মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ‘আগে লাল বোটের মাধ্যমে যাতায়াতে অনেক লোক হতাহত হয়েছেন। আমরা চাই নিরাপদ যাত্রীবাহন ফেরি যেন চালু থাকে। একটি সিন্ডিকেট আমাদের ফেরি বন্ধের চক্রান্ত চালাচ্ছে, যেটা আমরা কখনও হতে দেব না। সন্দ্বীপের মানুষ অনেক কষ্ট করেছেন।  যে কষ্টের দিন আমারা ফেলে এসেছি সে দিনে আর ফিরতে চাই না। আমরা চাই চক্রান্ত প্রতিহতের মাধ্যমে যাতায়াতের সুব্যবস্থা যেন অব্যাহত থাকে।’
 এদিকে, সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সন্দ্বীপ উপজেলা যুবদলের আহ্ববায়ক প্রভাষক নিঝুম খান। এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আলাউদ্দীন শিকদার, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলমগীর হোসাইন ঠাকুর, সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা.                
      
				
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র সদস য ব এনপ র বন ধ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
সুদানে চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ছাত্রশক্তির জাবি শাখার উদ্যোগে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইবিতে কুরআন ও হিজাববিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
মানববন্ধনে জাবি শাখার যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, “আমরা মনে করছি, সুদানকে ফিলিস্তিনের গাজায় পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। বিশ্ব মানবতা যেভাবে গাজাবাসীর পক্ষে কথা বলে, কিন্তু আফ্রিকার দেশ হওয়ায় আমরা সুদানের মানুষদের পক্ষে কথা বলছি না। আজ বিশ্ব মিডিয়া, জাতিসংঘ ও ওআইসি নিরব। ফলে আরব আমিরাতের ফান্ডিংয়ে সেখানে নির্বিচারে মানুষ মারা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় সেখানকার (আরব আমিরাতের) বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তারা এখনো কারাভোগ করছে। বাংলাদেশ সরকারকে বলব, আমাদের দেশের নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে সুদানে চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিবৃতি দিতে হবে।”
শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ছাড়াও মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
 
অন্যদিকে, রবিবার (২ নভেম্বর) ভাষ্কর্য চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হিউম্যান রাইটস সোসাইটির মানবাধিকার কর্মীরা গণহত্যা বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সংগঠনটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, “নানা কারণে বিভিন্ন দেশের সংঘাত থেকে শুরু করে গৃহযুদ্ধে বলি হয় নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ। সুদানে যে জাতিগত নিধন চলছে, তা নিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। মানবতা কোনো ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। সব মজলুমের পক্ষে অবস্থান নেওয়া একজন মানুষের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান বজায় রাখবে।”
এ সময় সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস, সদস্য নিং ম, ফয়সাল মাহমুদসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আহসান/লিমন/মেহেদী