গোয়ালন্দে পদ্মা নদী থেকে মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার
Published: 27th, April 2025 GMT
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদী থেকে জিহাদ সরদার (৩০) নামে এক ব্যক্তির মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার সকালে ছোট ভাকলা ইউনিয়নের অন্তর মোড় এলাকার খেয়াঘাটের পূর্ব পাশে পদ্মা নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখা যায়।
পরে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ও দৌলতদিয়া নৌপুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত জিহাদ সরদার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের চর বরাট গ্রামের শহিদ সরদারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা নদীতে একটি মাথাবিহীন মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়দের খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের পরিবারের সদস্যরা এসে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন।
নিহতের চাচা কেচমত সরদার জানান, জিহাদ ঢাকায় একটি জাহাজ নির্মাণ কারখানায় কাজ করতেন। গত ২৪ এপ্রিল ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে কারো সাথে ফোনে কথা বলে বেরিয়ে যান এবং আর ফিরে আসেননি। এরপর থেকেই পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজছিলেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা ও দৌলতদিয়া নৌপুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পরিচয় শনাক্ত করে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরদ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।