এবার ২১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শেখ পরিবারের নাম বাদ
Published: 28th, April 2025 GMT
দেশের আরও ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম থেকে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘জয় বাংলা’। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন নামও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি হাইস্কুল, ৩টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ২টি কলেজ রয়েছে। ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে সম্প্রতি আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বলেছে, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নামে রাষ্ট্রীয় সংস্থা/প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নামকরণ বাতিলের বিষয়ে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা: যাত্রা শুরু করবেন কোথা থেকে, কীভাবে?৩ ঘণ্টা আগেশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কক্সবাজারের রামুর শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নাম জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চকরিয়ার শেখ রাসেল স্কুলের নাম চকরিয়া সিটি মডেল স্কুল, বরিশালের বাবুগঞ্জের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নাম রহমতপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বাকেরগঞ্জের দুখল জয় বাংলা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম দুখল নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় রাখা হয়েছে।
পিরোজপুর সদরের শেখ হাসিনা একাডেমির নাম বাদুরা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রংপুরের পীরগঞ্জের শেখ হাসিনা আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নাম পীরগঞ্জ আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, দেবীগঞ্জের শেখ হাসিনা বালিকা বিদ্যালয়ের নাম শহীদ আবু সাঈদ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং পাবনার সাঁথিয়ার মাধবপুর শেখ হাসিনা উচ্চবিদ্যালয়ের নাম মাধবপুর উচ্চবিদ্যালয় রেখেছে মন্ত্রণালয়।
ময়মনসিংহের ফুলপুরের শেখ রাসেল স্মৃতি শিশুকল্যাণ নিম্নমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নাম মালিঝিকান্দি বালিকা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, জামালপুরের মাদারগঞ্জের গড়পাড়া শেখ ফজলুল হক মনি হাইস্কুলের নাম গড়পাড়া হাইস্কুল, একই উপজেলার হাট মাগুরা শেখ রেহানা উচ্চবিদ্যালয়ের নাম হাট মাগুরা উচ্চবিদ্যালয় ও ঢাকার পল্লবীর শেখ কামাল উচ্চবিদ্যালয়ের নাম পলাশী উচ্চবিদ্যায়ল রাখা হয়েছে।
এর বাইরে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের শেখ জামাল উচ্চবিদ্যালয়ের নাম ঈমানেরকান্দি উচ্চবিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ সদরের শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ের নাম উলপুর উচ্চবিদ্যালয়, টুঙ্গিপাড়ার ত্রিপল্লী শেখ আবু নাসের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম ত্রিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বাগেরহাটের চিতলমারীর পরানপুর শহীদ শেখ আবু নাসের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম পরানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।
আরও পড়ুনমাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা পাবেন অনুদান, আবেদনের সময় বাড়ল১ ঘণ্টা আগেঢাকার বাড্ডার শেখ রাসেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম আফতাবনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম বাঘিরারঘাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চুয়াডাঙ্গা সদরের শেখ রাসেল স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম আকন্দবাড়ীয়া মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরগুনা আমতলীর শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয়ের নাম উত্তর তক্কাবুনিয়া মহাবিদ্যালয় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুরের শেখ হাসিনা কলেজের নাম উলুকান্দি কলেজ করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে।
এর আগে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম বাদ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুনবেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে নিয়মিত কমিটি গঠন স্থগিত১৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ল অ য ন ড কল জ কল জ র ন ম রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।