কাজ নেন এক ঠিকাদার, বাস্তবায়ন করেন আরেকজন। কখনো কখনো তৃতীয় ব্যক্তি কাজ কিনে বাস্তবায়ন করেন। দিনের পর দিন এভাবেই চলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের প্রায় সব কাজ।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, এটি প্রাথমিক অপরাধ। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এলজিইডির প্রধান কার্যালয়সহ দেশের ৩৬টি কার্যালয়ে একযোগে অভিযান চালায় দুদক। এরমধ্যে রাজশাহী জেলা কার্যালয়ও ছিল। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে এলজিইডিতে দুদকের অভিযান

৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ: সাবেক এমপি কাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা

দুদকের সদস্যরা রাজশাহী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করে তার উপস্থিতিতে সরকারি কাজের বিভিন্ন প্রকল্পের ফাইলপত্র দেখেন। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এরপর এলজিইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক কর্মকর্তারা।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, “ঠিকাদারদের বিল প্রদানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কমিশন বা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে বলে আমরা অভিযোগ পাই। আমরা সব প্রকল্পের নথিগুলো দেখলাম। যে নির্বাহী প্রকৌশলী বা যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।”

তিনি বলেন, “আমরা কমিশন আদায়ের তাৎক্ষণিক প্রমাণ পাইনি। তবে এটা দেখলাম যে, এক ঠিকাদার কাজ পেয়ে অন্য কেউ কাজ করছেন। প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রে এই অনিয়ম হচ্ছে। কাজ নিয়ে নিজে না করে অন্য কেউ করলে অনিয়ম হওয়ার সুযোগ থেকে যায়। এভাবে কাজ হস্তান্তর করা প্রাথমিক অপরাধের মধ্যে পড়ছে। আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।”

তিনি জানান, মাঠপর্যায়ে কাজের মান কেমন তা তারা সরেজমিনে দেখবেন। তাদের সঙ্গে প্রকৌশলীকেও নেওয়া হবে। এসব দেখার পর তারা প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেবেন।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ অভ য ন

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন

ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। 

মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ