কেউ অপকর্ম করতে চাইলে সরাসরি ধরে পুলিশের কাছে দেবেন: মির্জা ফখরুল
Published: 29th, April 2025 GMT
বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী অপকর্ম করলে তাঁদের ধরে পুলিশের দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের মোলানী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগের সময় তিনি এ বক্তব্য দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দেশের জনগণের কাছে সবচাইতে নির্ভরশীল-নিরাপদ দল হচ্ছে বিএনপি। বিএনপিকে নিয়েই দেশের মানুষ আগামীর সরকার গঠন করতে চায়। এই অঞ্চলের মানুষ প্রথম থেকেই ধানের শীষে ভোট দিয়ে থাকে। আপনারা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করেন। অন্যায় করলে মানুষ ক্ষমা করবে না। আওয়ামী লীগকে যেভাবে ছুড়ে দিয়েছে, আপনাদেরও সেভাবে ছুড়ে দেবে। অন্যায় যেন কেউ না করেন, সেটা খেয়াল রাখবেন।’
নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিজেরা অত্যন্ত শক্তি নিয়ে আপনারা অপকর্মগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করবেন। কেউ যদি করতে চায়, তবে আমাদের জেলার নেতাদের বলবেন, না হয় সরাসরি ধরে পুলিশের কাছে দেবেন।’
আয়নাঘর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা কী আয়নাঘরের কথা শুনেছেন? ওই ঘরটা কী জানেন? যাদের ওরা (আওয়ামী লীগ) মনে করেছে সরকারের জন্য ভালো না, সে সমস্যা করতে পারে; তাঁকে পুলিশ পাঠিয়ে তুলে নিয়ে গেছে। তুলে নিয়ে গুম। খবর নাই আর। এমন অসংখ্য ঘটনা। আমরা তো এমন ঘটনার হিসাব করেছিলাম ৮০০ থেকে ৯০০ হবে। পরে হাসিনা পালানোর পর জাতিসংঘ থেকে টিম আসল। তাঁরা বললেন, আয়নাঘরে ১ হাজার ৭০০ মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল।’
আরও পড়ুনরাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকারের উচিত ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা: মির্জা ফখরুল২৮ এপ্রিল ২০২৫বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশের এমন একটা মানুষ নেই, যে কষ্ট শিকার করেনি। আমাদের সামনে এখন একটা সুযোগ এসেছে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে আমরা সবাই মিলে ভোট দিয়ে সংসদ নির্বাচন করতে চাই, সরকার নির্বাচন করতে চাই। যে সরকার আমাদের কথা শুনবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা এই সমাজে কোনো বিভেদ রাখতে চাই না। আমরা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা একটা ভালোবাসার বাংলাদেশ দেখতে চাই। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা (আওয়ামী লীগ) একটা ধোয়া ওঠাল যে হিন্দুদের নাকি মেরে ফেলা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, এখানে কয়টা হিন্দু মারা গেছে? কিন্তু ওরা এই কথাটা তুলছে। শুধু তুলছে না, সারা পৃথিবীতে এই কথাটা ছড়িয়ে দিয়েছে। উল্টো আমাদের ছেলেরা হিন্দু ভাইদের মন্দির-বাড়ি পাহারা দিয়েছে। মিথ্যাকে সত্য দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা সব সময় একটা কথা মনে রাখবেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি, ঠাকুরগাঁও একটা শান্তিপ্রিয় এলাকা। আমরা এই এলাকায় সবাই ভাইবোনের মতো বসবাস করি। এখানে কারও যেন কোনো ক্ষতি না হয়, আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই। যখন কোনো গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি, বিএনপির আমলে আপনারা সবচাইতে নিরাপদে থাকবেন।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কেউ কেউ সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ফ্যাসিবাদ হাসিনা নাকি আবার ফিরে আসবে। ফিরে এলে আমাদের কিছু করতে হবে না, তার ব্যবস্থা মানুষজনই নিয়ে নেবে। সে যে অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়েছে, তার হিসেব মানুষই নিয়ে নেবে। আর ফিরে এলেও তাকে এ দেশের মানুষ আর রাজনৈতিকভাবে গ্রহণ করবে না।’
মোলানী উচ্চবিদ্যালয়ে গণসংযোগের পর মির্জা ফখরুল মহাদেবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও চিলারং রেলঘুণ্টি এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনট্রাম্প-সি-মোদি এসে বাংলাদেশে কিছু করে দিয়ে যাবেন না: মির্জা ফখরুল১৯ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র আপন দ র আম দ র আওয় ম সরক র ফখর ল আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
অপকর্মকারীদের দায় দল নেবে না: তমিজ উদ্দিন
ঢাকার ধামরাইয়ে বিএনপির এক জনসভায় দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তমিজ উদ্দিন বলেছেন, ‘‘যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াবে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট করে দিয়েছেন— দল তাদের দায়িত্ব নেবে না।”
রবিবার (১৫ জুন) গাংগুটিয়া ইউনিয়নের নবগ্রাম বাজারে কাওয়ালীপাড়া-নবগ্রাম বাজার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ধামরাই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্ব জনসভায় উপজেলার গাংগুটিয়া, আমতা, বালিয়া, কুশুরা ও সানোড়া ইউনিয়নের বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
এসময় তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘আমাদের সামনে লড়াই এক দিকে নয়। দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সামনে নির্বাচন, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এই সময় আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। কারণ আমরা মোনাফেক, মীরজাফর সবাইকে নিয়ে একত্রে চলছি। আমরা এই চলাটা চাই না। আমরা চাই, দলে প্রতিযোগিতা-প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, সুন্দর থাকবে। সেখান থেকে যোগ্যরা এগিয়ে আসবে, আমরা সবাই তার সঙ্গে থাকব। এখানে ঐক্য ছাড়া বিকল্প কিছু নাই। যারা সন্ত্রাসী করবে, তারেক রহমান পরিষ্কার বলেছেন, তিনি তাদের দায়িত্ব নেবেন না। অর্থাৎ দল তাদের দায়িত্ব নেবে না। অতএব যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে, তাদের বিএনপির বলে চিন্তা করবেন না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বিএনপি করে বিএনপির সুবিধা নিয়ে যারা আওয়ামী লীগের সময় আঁতাত করেছে। এখন বড় নেতা হয়েছে, তাদের বিষয় ঠান্ডা মাথায় খেয়াল রাখতে হবে। যেমনটি তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, সামনে একটা কঠিন নির্বাচন, ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। নির্বাচন দেবে কিন্তু ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। আপনাদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। এখানে আমরা সবাই জানি, ধামরাইয়ে নির্বাচন হলে, মানুষ ভোট দিতে পারলে কি হবে আমরা জানি। আমরা সুন্দর পরিবেশের অপেক্ষায় আছি।’’
সভায় আরও বক্তব্য দেন ধামরাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রাকিবুর রহমান খান ফরহাদ, বালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সহসভাপতি আব্দুল মান্নান মধু, আমতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম লাবু, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এইচ এম লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ধামরাই উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
এছাড়াও উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, যুবদল নেতা মো. খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাব্বির/এস