প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মুসলমান পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে সমবেত হন। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এই ধর্মীয় কর্তব্য পালনের জন্য মক্কা ও তার আশপাশের পবিত্র স্থানগুলোতে মুসল্লিরা একত্র হন। এই গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সৌদি হজ মন্ত্রণালয় তীর্থযাত্রীদের প্রাক-প্রস্তুতির ওপর জোর দিয়ে বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজের যাত্রা শুরুর আগেই তীর্থযাত্রীদের এই ইবাদতের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা অর্জন করা উচিত। হজের স্তম্ভ, বাধ্যবাধকতা, সুন্নাহ, নিষিদ্ধ কাজ এবং প্রতিটি আচারের সঠিক পদ্ধতি ও নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়া, পবিত্র স্থানগুলোর গুরুত্ব ও সেগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলোও শিখে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সৌদি হজ মন্ত্রণালয় তাদের অফিশিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে বলেছে, ‘তীর্থযাত্রীদের উচিত হজের স্তম্ভ, কর্তব্য, সুন্নাহ এবং নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পর্কে জানা। প্রতিটি আচারের সঠিক পদ্ধতি, নিয়ম এবং পবিত্র স্থানগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা অর্জন করা জরুরি।’

আরও পড়ুনহজযাত্রীদের বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে হজ গাইড২৪ মে ২০২৪

হজের বিস্তারিত নির্দেশিকা বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে (লিংক: https://learn.

haj.gov.sa/home/tracks/details/15787)।

ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী, যেসব মুসলমান শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম, তাদের জীবনে অন্তত একবার হজ পালন করা ফরজ। প্রতি বছর ইসলামি চান্দ্র পঞ্জিকার ১২তম মাস জিলহজ্জ মাসের অষ্টম দিনে হজ শুরু হয় এবং সাধারণত পাঁচ দিন স্থায়ী হয়। এ বছর জুনের শুরুতে হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ইসলামের জন্মস্থান সৌদি আরবে ইতিমধ্যে হজের প্রস্তুতি শুরু করেছে। অনিয়মিত তীর্থযাত্রীদের প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মক্কা ও অন্যান্য পবিত্র স্থানে শুধুমাত্র অনুমোদিত তীর্থযাত্রীদেরই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

এছাড়া, হজের প্রস্তুতি হিসেবে সৌদি আরব সম্প্রতি বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে হজের জন্য একটি স্মার্ট বুক প্রকাশ এবং কাবার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর ওপর একটি নির্দেশিকা। এসব উদ্যোগ তীর্থযাত্রীদের জন্য হজ পালনকে আরও সহজ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।

হজের শেষ আচার হিসেবে ‘জামারাত’ নামে একটি অনুষ্ঠানে হজযাত্রীরা শয়তানের প্রতীক হিসেবে স্তম্ভে পাথর নিক্ষেপ করেন। এই আচারটি হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তীর্থযাত্রীদের এটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সৌদি আরবের এই প্রাক-প্রস্তুতি নির্দেশনা তীর্থযাত্রীদের জন্য একটি সুসংগঠিত ও আধ্যাত্মিকভাবে পরিপূর্ণ হজ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র : গালফ নিউজ

আরও পড়ুনহজযাত্রীদের জন্য ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ চালু করেছে সরকার২৮ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ত র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ