খাতার পেজ ছিড়ে ফেলা, মার্ক টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করেছেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যানের হুর-ই-জান্নাত জ্যোতির পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ওই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

অপরদিকে, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে ওই বিভাগের সভাপতি ড.

মোছা. হুর-ই-জান্নাতকে হেনস্তা কারার প্রতিবাদে ও প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীবকে তদন্ত কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন আরেকদল শিক্ষার্থী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার বেলা ১টার দিকে অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভ্যাটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতের বিরুদ্ধে খাতার পেজ ছিড়ে ফেলা, মার্ক টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রশাসন ভবনের সমানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ওই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে ‘আমার খাতার পেজ গেল কই?’, ‘মার্ক টেম্পারিং এর বিচার চাই’, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিচার চাই, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন তারা।

পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এর আগে, মঙ্গলবার রাতে অ্যনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভ্যাটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতকে হেনস্তা কারার প্রতিবাদে ও প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীবকে তদন্ত কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন আরেকদল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

এ সময় প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীকে তদন্ত কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেন তারা। খবর পেয়ে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে এসে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

গত ২১ মার্চ ওই বিভাগের ১৫ জন শিক্ষার্থী উপাচার্য বরাবর ওই বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণ, মানসিক হেনস্তা এবং পছন্দের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন আনিসুর রহমানকে সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসএম গোলাম হায়দারকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, কৃষি অনুসদের ডিম জুলহাস আহমেদ জুয়েল, প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজিব, ছাত্র উপদেষ্টা মো. বদরুল ইসলাম, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মানসুরা খানম, কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের সরকারি অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম। এই কমিটি পাঁচটি বৈঠক সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সর্বশেষ বৈঠক করেছেন তারা।

সোমবার তদন্ত কমিটির সভায় অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভ্যাটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের সভাপতি ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাতকে তদন্ত কমিটির সদস্য ও প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ড. মোছা. হুর-ই-জান্নাত।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অ্যানিম্যাল সাইন্স এন্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান হুর-ই-জান্নাত জ্যোতি শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ, পরীক্ষার উত্তরপত্রের ভেতর থেকে চার থেকে পাঁচটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে সাদা কাগজ ঢুকিয়ে দেওয়া, অন্য কোর্সের শিক্ষকদের থেকে মার্ক না নিয়ে নিজের ইচ্ছা মত ফলাফল প্রকাশ, পরীক্ষার আগে পছন্দের শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। এসব অভিযোগের প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মার্জিয়া আফরোজকে প্রোটোজ্যুলজি ও টক্সিকোলজি কোর্সের পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ওই কোর্স দুইটির কয়েকটি উত্তরপত্রের মধ্যে পেজ ছেড়া পান। দ্বিতীয় পরীক্ষা হিসেবে ওই শিক্ষক লার্জ অ্যানিম্যাল মেডিসিন ও ডেইরি কেমিস্ট্রিয়ান মাইক্রোবায়োলজি কোর্সের কয়েকটি উত্তরপত্র মধ্যে চারটি করে পেজ ছেড়া দেখতে পান। এ বিষয়ে আরজে আফরোজ উপাচার্য বরাবর লিখিতভাবে জানান।

অবস্থানরত চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মহিন হোসেন বলেন, “পরীক্ষার আগে হুর-ই-জান্নাতি ম্যাম বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন দেন। ওই শিক্ষার্থী একই বিভাগের তার এক বন্ধুকে মেসেঞ্জারে পাঠায়। পরে তার বন্ধুর সঙ্গে মনমালিন্য হলে সে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছে সেটা প্রকাশ করে। যে প্রশ্নপত্র তাদের দিয়েছে, পরীক্ষার হলে দেখা সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিল। এছাড়া ম্যাম তার কাছের কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য সকলের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে।”

তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি আমাদের ডেকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন। বিভাগের অভিযোগের মাধ্যমে জানতে পারলাম, আমাদের কয়েকজনের উত্তরপত্রের চারটি পেজ ছেড়া। এমনকি আমাদের এক শিক্ষার্থী শূন্য পেয়েও চূড়ান্ত পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে। এটা কি করে সম্ভব? আমরা চেয়ারম্যান ম্যামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং আমাদের বিরুদ্ধে যে অন্যায় করা হয়েছে, তার উপযুক্ত বিচার চাই।”

শিক্ষার্থী সাগর রায় বলেন, “আমাদের এক শিক্ষক ইনকোর্স, মিডটার্মসহ সব পরীক্ষা নিয়েছেন। ওই শিক্ষকের কোনো ফলাফল না নিয়েই চেয়ারম্যান ম্যাডাম তার স্বাক্ষর নকল করে পরীক্ষক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে ফলাফল জমা দিয়েছেন। আমরা ওই শিক্ষকের কাছেই জানতে পেরেছি, তিনি ফলাফল জমা দেননি।”

হেনস্তার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমার কাছে আসেনি। রিপোর্ট আসার পরে আমরা দেখব এবং সিদ্ধান্ত নেব। অভিযোগ মিথ্যা না সত্য, এটা তদন্ত কমিটির মাধ্যমে জানতে হবে “

তিনি বলেন, “সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান বলেছেন, কমিটি পূর্ণ গঠন করার জন্য। সে বিষয়টিও আমরা দেখছি। আমরা আশা করছি, সত্য বের হয়ে আসবে।”

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর ফ জ জ ম ন র জ ব ওই ব ভ গ র পর ক ষ র ওই শ ক ষ উপ চ র য অবস থ ন গঠন কর কর ছ ন আম দ র স ইন স ফল ফল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
  • ৪৭তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার্থীদের জন্য পিএসসির যত নির্দেশনা