ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (ইআইবি) বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫০ মিলিয়ন বা ৩৫ কোটি ইউরোর কাঠামোগত ঋণ অনুমোদন করেছে। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) অতিরিক্ত ৪৫ মিলিয়ন বা ৪ কোটি ৫০ লাখ ইউরো অনুদান দেবে। পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস ও অভিযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করাই এসব প্রকল্পের লক্ষ্য।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫৮তম বার্ষিক সভা চালাকালে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আর্থিক অংশীদারদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে বাংলাদেশের। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত করা।

গতকাল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) সভাপতি নাদিয়া কালভিনোর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে ইআইবির চলমান সহায়তার পরিধি বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেই বৈঠকে এই ঋণ ও অনুদানের অনুমোদন হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ইআইবি ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাঠামোগত চুক্তির আওতায় কাজ করে আসছে। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য, পানি সরবরাহ, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের ছয়টি চলমান প্রকল্পে প্রায় ৬৩৫ মিলিয়ন বা ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করেছে। ইআইবি মূলত ইইউ সদস্যদেশগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ইইউর উন্নয়ন সহযোগিতা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অবকাঠামো খাতে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তায় বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ এবং মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই বিনিয়োগ অপরিহার্য। তিনি ইইউ ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশের কৌশলগত খাতগুলোতে আরও বেশি অনুদানভিত্তিক অথবা স্বল্প সুদের ঋণসহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।

এ ছাড়া অর্থ উপদেষ্টা জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের (জেবিআইসি) প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। জেবিআইসি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্প অর্থায়ন, কৌশলগত অংশীদারি ও বিনিয়োগ সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। জেবিআইসির উল্লেখযোগ্য অর্থায়নের মধ্যে রয়েছে ডিএপি-২ সার কারখানা (যার সম্পূর্ণ পরিশোধিত অর্থের পরিমাণ ৭১৫.

৬ মিলিয়ন বা ৭১ কোটি ৫৬ লাখ ডলার), ঘোড়াশাল সার কারখানার যন্ত্রপাতি (মিতসুবিশির সরবরাহ করা) ও মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ প্রকল্প (যেখানে ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার এডিবির সঙ্গে যৌথভাবে অর্থায়ন করা হয়েছে)।

অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া) ইয়িংমিং ইয়াং, ওপেক ফান্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দ্য অ্যাগ্রিকালচার ইনোভেশন মেকানিজম ফর স্কেলের (এআইএম ফর স্কেল) ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছে। এই সভাগুলোতে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব উচ্চপর্যায়ের বৈঠক বাংলাদেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে বৈশ্বিক আর্থিক অংশীদারদের সঙ্গে বাংলাদেশের কৌশলগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প ইউর প য় অন দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইউসিবির ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত এজিএমে ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর।

ইউসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউসিবির স্বতন্ত্র পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন, পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. তানভীর খান, স্বতন্ত্র পরিচালক ও নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ আলী, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ।

গত বছরের ২৭ আগস্ট ইউসিবির পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সঙ্গে নতুন চেয়ারম্যান করা হয় ব্যাংকটির উদ্যোক্তা প্রতিনিধি শরীফ জহীরকে। এ ছাড়া নতুন পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে গঠিত ওই পরিচালনা পর্ষদের অধীনে এটিই ছিল প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে ইউসিবির অনুমোদিত মূলধন ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার। বার্ষিক সাধারণ সভায় এটিকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ পাঁচ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করার বিষয়ে শেয়ারধারীরা সর্বসম্মত অনুমোদন দেন। পাশাপাশি রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এবং কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন শেয়ার ইস্যুর বিষয়টিও সভায় অনুমোদন করা হয়।

সভায় পরিচালনা পর্ষদকে অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহের জন্য কৌশলগত অংশীদার খুঁজে বের করার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, এ জন্য তারা ব্যাংকিং, ডিজিটাল ব্যাংকিং, উন্নয়নমূলক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ডিএফআই) ও সংশ্লিষ্ট খাতে অভিজ্ঞ ও প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবেন। তবে অবশ্যই এ কার্যক্রম বিদ্যমান সব নিয়ম মেনে ও প্রয়োজনীয় অনুমোদন সাপেক্ষে করতে হবে।

সভায় জানানো হয়, মাত্র ছয় মাসে ইউসিবি ৭ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকার নিট আমানত এবং ৩ লাখ নতুন হিসাব খোলার মাধ্যমে যেভাবে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে, সে জন্য বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারধারীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভা শেষ করেন ইউসিবির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) ফারুক আহাম্মদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান চাইছে আধুনিক যুদ্ধবিমান, চীনের সামনে বাধা অনেক…
  • ইউসিবির ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
  • চীন-রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া শুরু