জাককানইবির আ.লীগপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ ২১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 5th, May 2025 GMT
জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদালয়ে আনুমানিক ২১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতাকর্মী, আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়।
সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল (দ্রুত বিচার) ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো.
গতকাল রোববার (৪ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক ও বাংলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন বলে জানান তিনি।
মো. আজমত আলী জানান, ভুক্তভোগী বাদী বিজ্ঞ আদালতে এই মামলাটি দায়েরের পর ওইদিন সন্ধ্যায় আদালতের বিচারক মোছা. নাসিমা খাতুন বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
নথি অনুযায়ী এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার জাকিবুল হাসান রনিকে। এছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য অন্যান্য আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আহসান লিমন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহম্মেদ ও নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, তরিকুল ইসলাম রানা, প্রকৌশল শাখার প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জোবায়ের হোসেন, অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ. হালিম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ন কবীর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সহকারি রেজিষ্ট্রার ইব্রাহীম খলিল শান্ত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সেকশন অফিসার আপেল মাহমুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুনতাসির তানভীর জয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার নুসরাত জাহান শিমু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররাত শবনম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষক ড. সেলিম আল মামুন, ড. উজ্জল কুমার, অর্থনীতির শিক্ষক ড. মো. নজরুল ইসলামসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়।
বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত জুলাই-আগষ্টের সরকার পতনের আন্দোলন দমনে গত বছরের ৩ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। ওই সমাবেশে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেন। এর পরদিন গত বছরের ৪ আগষ্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে আন্দোলনকারীদের ওপর আসামীদের পরস্পর যোগসাজসে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগ। এতে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ সময় আসামীরা বেশ কিছু মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করে।
বাদী আশিকুর রহমান সমকালকে বলেন, প্রায় ৯ মাস পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য মামলা করেছি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে আমার ওপর ছাত্রলীগ একাধিকবার হামলা মামলা করে। এসব ঘটনায় আমি আদালত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ কর মকর ত ল ইসল ম আগষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
পাবনায় নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামানিককে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ
মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত
নিহত নিজাম প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামাণিকও কৃষকের কাজ করতেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে রবিবার সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন। খাবার শেষে এশার নামাজ পড়তে দাঁড়ান তিনি। এ সময় ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে নিজাম প্রমানিককে কুপিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা। পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। অভিযুক্তকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ রেখে পুলিশকে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহতের অপর ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খাবার শেষে রুমে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় রুম আটকিয়ে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগেও সে আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারধর করে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকে (রবিবার) হত্যা করতে গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।”
তিনি আরো বলেন, “সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইতো। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। তার শাস্তি হওয়া উচিত।”
পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাকে আটক করতে গিয়ে তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ