টাকা লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বে শাবল দিয়ে কুপিয়ে অটোরিকশার চালককে হত্যা
Published: 7th, May 2025 GMT
কুমিল্লার দেবীদ্বারে টাকা লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক ব্যক্তিকে শাবল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ত্রিবিদ্যা এলাকার একটি ওয়ার্কশপ থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সফিউল্লাহ (৪৫) উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ভানী গ্রামের কেরুর বাড়ির মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। সফিউল্লাহ পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ছিলেন। ওয়ার্কশপের মালিক মো.
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাসেল ও সফিউল্লাহর মধ্যে টাকা লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দুই মাস আগেও তাঁদের মধ্যে মারামারি হয়। ওই ঘটনায় সালিসও হয়েছিল, তবে কোনো সমাধান হয়নি। কারণ, স্পষ্ট করে কেউ বলেননি তাঁদের মধ্যে কিসের টাকা এবং কত টাকার লেনদেন ছিল। এমনকি কে পাওনাদার আর কে দেনাদার, তা-ও স্পষ্ট করে বলেননি তাঁরা।
গতকাল বিকেলে রাসেল ও সফিউল্লাহর মধ্যে কথা-কাটাকাটির হয়। একপর্যায়ে রাসেল শাবল দিয়ে সফিউল্লাহকে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে রাসেল তাঁর ওয়ার্কশপের ভেতরে লাশ রেখে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর রাসেল তাঁর পরিবারের সদস্যদের মুঠোফোনে জানান, নিজ দোকানে তিনি সফিউল্লাহকে খুন করে ফেলে রেখে এসেছেন। পরে সফিউল্লাহর পরিবারের লোকজন স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘অভিযুক্ত রাসেল পলাতক। তাঁকে ধরতে অভিযান চলমান। তবে কত টাকা লেনদেন বা কার সঙ্গে কার লেনদেন ছিল, তা এখনো নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল নদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।