জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে চার দফা দাবি নিয়ে সমাবেশ করেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বরে এ সমাবেশ আয়োজন করে ‘জবি ঐক্য’।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ইউজিসির কালো হাত; ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘মন্ত্রণালয়ের কালো হাত; ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘বাজেটের বৈষম্য মানি না, মানব না’, ‘বৈষম্যের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ানরা জেগেছে’ স্লোগান দেন।

চার দফা দাবি হলো—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট বাড়াতে হবে ও ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং পুরান ঢাকার ড.

হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হল ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন অন্তর মুক্তমঞ্চে এসে জানাতে হবে। ১৫ মের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।

সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নূর নবী বলেন, প্রতিটি স্তরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় ও সচিবালয়ে এমন কিছু স্বৈরাচারী দোসর বসে আছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে জবির বাজেট আটকে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১১টি হলের কথা বলা হলেও বাস্তবে সেগুলো বিভিন্ন গোষ্ঠীর দখলে। প্রশাসন এখনও এসব হল বা জমি উদ্ধার করতে পারেনি।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বলেন, আমরা যখন অধিকার আদায়ের জন্য শিক্ষকদের পাশে চাই, তখন অনেক শিক্ষক আমাদের সহায়তা করেন না। এতে আমাদের লজ্জা লাগে।

সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন বলেন, আমরা অতীতে বহু প্রশাসনকে দেখেছি, যারা বাহির থেকে এসে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়িত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে ভাবেনি। আবাসন আমাদের ন্যায্য অধিকার। অতীতে আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এখন আর কোন ধরনের বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শারমিন বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ইউজিসির সাথে বৈঠক করে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ভাতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় একদিনে অন্তত আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত প্রায় ৯৪ জন। এ নিয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ৫২ হাজার ৮৬০। আর গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২ হাজার ৭৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আলজাজিরার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে এবং সোমবার বর্বর হামলায় উপত্যকাজুড়ে কমপক্ষে ৩৯ জন নিহত হয়েছেন।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি আরও ৯৪ জন আহত হয়েছেন। যার ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ